Lok Sabha Election 2024

শাহি-ফর্মুলায় ভোট লড়তে রাজ্যে নতুন ‘পাতা’ খুলছে বিজেপি, ১০ লাখের লক্ষ্য নিয়ে প্রস্তুতি সারা বাংলায়

অমিত শাহ নাকি প্রথম ভোটার তালিকার প্রতিটি পাতার জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করেছিলেন। শাহের সেই ফর্মুলা গোটা দেশের সঙ্গে এ বার বাংলাতেও চায় গেরুয়া শিবির।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৪৬
Share:

অমিত শাহের দেখানো পথেই হাঁটতে চান সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা। — ফাইল চিত্র।

একটি পাতা। কুড়ি জন ভোটার। লোকসভা ভোটে লক্ষ্যপূরণে রাজ্য বিজেপির নতুন অস্ত্র— ‘পৃষ্ঠাপ্রমুখ’।

Advertisement

‘পন্নাপ্রমুখ’ শব্দটা ভারতীয় রাজনীতিতে প্রথম শোনা গিয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরে। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। বিজেবি পেয়েছিল ২৮২টি আসন। উত্তরপ্রদেশে মোট ৮০টি আসনের মধ্যে বিজেপি জিতেছিল ৭১টিতে। সহযোগী ‘অপনা দল’ মিলিয়ে আসন হয়েছিল ৭৩টি। সেই নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের পিছনে অমিত শাহের ভূমিকার কথা উঠে এসেছিল। জয়ের পরে শাহকে তাঁর ‘সেনাপতি’ আখ্যা দিয়েছিলেন মোদী। কয়েক মাসের মধ্যেই শাহকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতিও করা হয়। সেই সময়ে বিজেপির তরফেই দাবি করা হয়েছিল, বুথ স্তরের সংগঠনকে নতুন করে সাজিয়ে উত্তরপ্রদেশে ‘কেল্লাফতে’ করেছিলেন শাহ।

তখনই শাহ বুথের কর্মীদের নতুন নাম দিয়েছিলেন— পন্নাপ্রমুখ’। ভোটার তালিকার প্রতিটি পাতার জন্য আলাদা আলাদা কর্মী নিয়োগ করেছিলেন তিনি। প্রতিটি ‘পাতা’। হিন্দিতে ‘পন্না’। ঠিক হয়েছিল, একটি পাতায় যে ক’জন ভোটারের নাম রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন এক জন করে ‘পন্নাপ্রমুখ’। তিনিই থাকবেন ওই পৃষ্ঠাটির ‘দায়িত্বে’। সেই পৃষ্ঠায নাম-থাকা প্রতিটি লোকের সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত যোগাযোগ রাখবেন। নিয়মিত তাঁদের খোঁজখবর নেবেন। প্রয়োজন বা সমস্যা থাকলে তা মেটাবেন। ভোটার তালিকার একটি পাতায় সাধারণত চার থেকে পাঁচটি পরিবারের সদস্যদের নাম থাকে। অর্থাৎ একটি বুথ এলাকার প্রতি পাঁচ পরিবারের জন্য এক জন করে কর্মী (পন্নাপ্রমুখ) নিয়োগ। এই পদ্ধতি পরে উত্তরভারতের সব রাজ্যেই বিজেপি প্রয়োগ করেছে। গুজরাত, মহারাষ্ট্রে-সহ বিজেপির শাসনাধীন সব রাজ্যেই তা রয়েছে। বাংলায় চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এত দিন করা যায়নি।

Advertisement

এ বার লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই অসমাপ্ত কাজ সেরে ফেলতে চাইছে বিজেপি। বাংলায় ওই পদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পৃষ্ঠাপ্রমুখ’। সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির ‘বুথ সশক্তিকরণ’ কর্মসূচির সময়ে ওই কাজে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাতে সাফল্য মিলেছে বলেও বিজেপির দাবি। দলের লক্ষ্য ১০ লাখ ‘পৃষ্ঠাপ্রমুখ’ নিয়োগ করা। এখনও পর্যন্ত ১ লাখ ৫৫ হাজার পৃষ্ঠাপ্রমুখ নিযুক্ত হয়ে গিয়েছেন বলে বুধবার দলের বর্ধিত কার্যকারিণী বৈঠকে ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রের খবর, বাকি কাজ জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করে ফেলাই দলের লক্ষ্য।

লোকসভা নির্বাচনের আগে অতীতে অসমাপ্ত আরও একটি কাজ করতে চায় রাজ্য বিজেপি। বুথ স্তরে দলের সাংগনিক কাঠামো তৈরি হয়ে গেলে আসন ধরে ধরে সব বুথকে চারটি ভাগ করা। সংগঠন এবং ভোট পাওয়ার সম্ভাবনার বিচারে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এবং ‘ডি’ র‌্যাঙ্কিং দেওয়া। সেই হিসাবে শক্তি বাড়ানোর পরিকল্পনা বা অন্যান্য অঙ্ক কষা হবে। বৈঠকে কাজের অগ্রগতি নিয়ে ইতিবাচক ঘোষণা করা হলেও নেতারা এটা মানছেন যে, অনেক লোকসভা এলাকাতেই ১০০ শতাংশ বুথকে সাংগঠনিক ভাবে সাজানো যায়নি এখনও। সেই কাজও জানুয়ারি মাসের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement