অধিবেশন কক্ষের বাইরে তাঁদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
রবিবার পানিহাটি ও ঝালদায় দুই কাউন্সিলর খুন হয়েছেন। এক জন তৃণমূলের, অন্য জন কংগ্রেসের। দুই কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় বিধানসভার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দাবি করল বিজেপি পরিষদীয় দল। ঘটনাচক্রে, নিহত দুই কাউন্সিলরের একজনও গেরুয়া শিবিরের নন।
বিজেপি-র কুমার গ্রামের বিধায়ক মনোজ ওঁরাও ‘কলিং অ্যাটেনশন’ পর্বে বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর পর ‘জিরো আওয়ার’-এ শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ফের প্রসঙ্গটি তোলেন। বিজেপি পরিষদীয় দলের দাবি, অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীকে এ বিষয়ে বিধানসভায় এসে জবাব দিতে হবে। অধিবেশন কক্ষের বাইরে তাঁদের দাবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। কংগ্রেস ও তৃণমূল কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হন তাঁরা। সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর জবাবদিহি দাবি করেছেন গেরুয়া শিবিরের ওই বিধায়করা।
বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগগা বলেছেন, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় পানিহাটি তৃণমূল কাউন্সিলর অনুপম দত্ত ও ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে যে ভাবে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে থেকে গুলি করে মারা হয়েছে, তা উদ্বেগজনক। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছি, পশ্চিমবঙ্গে আইন-শৃঙ্খলার শাসন নেই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের কার্যত তালিবানি শাসন চলছে। যেখানে জনপ্রতিনিধিদের জীবনের নিশ্চয়তা নেই, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা চাই, মুখ্যমন্ত্রী এসে এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে যান। কেন জনপ্রতিনিধিরা খুন হলেন, তা-ও যেন জানিয়ে যান তিনি।’’
বিজেপি পরিষদীয় দলের অভিযোগ, রাজ্যপালের ভাষণ ও বাজেট বক্তৃতার সময় যদি মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকতে পারেন, তা হলে জনপ্রতিনিধিদের হত্যার অভিযোগের জবাব দিতে কেন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় হাজির হবেন না?
বিধানসভাতেই হরিশ্চন্দ্রপুরের তৃণমূল বিধায়ক তাজমুল হোসেন বলেন, ‘‘পানিহাটিতে কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় একজনকে ইতিমধ্যেই ধরা হয়েছে। তাঁকে জেরা করে এই ঘটনার পিছনে আরও কারা রয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যায় পানিহাটিতে সদ্য জয়ী ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনুপমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই কায়দায় ঝালদা পুরসভার কাউন্সিলর তপনকেও গুলি করে মারা হয়েছে।
পানিহাটির খুনের ঘটনায় একজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঝালদা-কাণ্ডে দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাতেও ক্ষোভ কমেনি বিরোধী শিবিরের।