বিস্ফোরণ ঘিরে চড়ছে পারদ। — নিজস্ব চিত্র।
ভূপতিনগরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করুক জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। শনিবার এমন দাবিই জানিয়েছে বিজেপি। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার ঠিক আগের রাতে বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে এক তৃণমূল নেতার বাড়ি। তাতে মৃত্যু হয়েছে এক তৃণমূল নেতা-সহ তিন জনের। ওই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লেখা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। যদিও গোটা বিষয়টি ‘চক্রান্ত’ বলে অভিযোগ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয় তল্লাশির দাবি তুলেছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ কাঁথির ভগবানপুর-২ ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়য়াবিলা গ্রামে বিস্ফোরণ ঘটে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ঘটনা নিয়ে শাসকদলকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে তদন্তের দাবি তুলে চাপও বজায় রাখার চেষ্টা করছে তারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তের কথায়, ‘‘আমরা চাইছি, এনআইএ তদন্ত করুক। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠিও লিখছি। কারণ তিন জন মারা গিয়েছে। তাদের সেই এক্তিয়ার আছে।’’ শনিবার মালদহ সার্কিট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে করেন সুকান্ত। সেখান থেকেই এই দাবি তোলেন তিনি। ঘটনাচক্রে ভূপতিনগরের ওই ঘটনার পর স্থানীয় বিজেপি নেতাদের গলাতেও শোনা গিয়েছে এনআইএ তদন্তের দাবি।
ভূপতিনগরের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘আমাদের আশঙ্কা, অভিষেকের উপর আক্রমণের চক্রান্ত চলছে গত কয়েক দিন ধরে। এই বোমাবাজি গত ৩-৪ দিন ধরে চলছে। আমাদের প্রবীণ নেতা মিহির ভৌমিক জখম। শুভেন্দুর কনভয় তল্লাশি করা হোক। কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোড়কে বোমা বিলি করা হচ্ছে এলাকায়। এনআইএ তদন্তের নামে তৃণমূলের ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে ভোটের আগে।’’ বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি করছেন তিনি।
এর আগে, গত ৩ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরেরই পশ্চিম ভাঙনমারি গ্রামে কঙ্কন করণ নামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। তার জেরে মৃত্যু হয় অনুপ দাস নামে এক তৃণমূল কর্মীর। জখম হন অনেকে। এর পর স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক তা নিয়ে এনআইএ তদন্তের দাবি তোলেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে লিখিত আবেদনও করেন। এর পর ওই বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তভার নেয় এনআইএ। ওই ঘটনায় জনকা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সমরশঙ্কর মণ্ডল-সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে এনআইএ।