ছবি: সংগৃহীত।
পূর্ণ বয়কটে না গেলেও বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই সরকার পক্ষের সঙ্গে সংঘাতে জড়াল বিরোধী দল বিজেপি। শোক প্রস্তাবের মাধ্যমে সোমবার বিধানসভার অধিবেশন শুরু হয়েছে। সেই পর্বে অংশগ্রহণ করেছিলেন বিজেপি বিধায়কেরা। কিন্তু শারদোৎসবের সময়ে বাংলাদেশে হিংসার ঘটনায় নিহতদের উল্লেখ শোক প্রস্তাবে রাখার অনুরোধ সরকার পক্ষ না মানায় পরে বিধানসভা চত্বরেই মোমবাতি হাতে মৌনী মিছিল করেন বিজেপি বিধায়কেরা।
অধিবেশন শুরু হয়ে গেলেও কী বিল বিধানসভায় এ বার আসতে পারে, তা অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কার্য উপদেষ্টা (বি এ) কমিটির বৈঠকে এ দিন ঠিক হয়েছে, বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবার্ষিকীর উপরে আলোচনা হবে আজ, মঙ্গলবার। একই ভাবে আগামী ৮ নভেম্বর নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত প্রস্তাব এনে তার উপরে আলোচনা হবে। মাঝে ৩ তারিখ থেকে কয়েক দিন অধিবেশন বন্ধ থাকবে কালী পুজো ও ভাইফোঁটা উপলক্ষে। বি এ কমিটির বৈঠকে ঘোষণামতোই বিজেপির কেউ ছিলেন না। বিধানসভার অধিবেশন শুরুর আগে এ দিন সকালে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অনুরোধ জানান, বাংলাদেশের ঘটনায় নিহতদের কথা শোক প্রস্তাবে উল্লেখ করা হোক। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। বিকালে বিরোধী দলনেতার নেতৃত্বে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে এবং হাতে মোমবাতি নিয়ে মৌনী মিছিল করে বিধানসভা প্রদক্ষিণ করেন বিজেপি বিধায়কেরা। শুভেন্দু বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের কথা শোক প্রস্তাবে উল্লেখ করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। স্পিকার বা সরকার পক্ষের এক্তিয়ার আছে, তাঁরা অনুরোধ মানেননি। আমরা নিজেরাই তাই মৌনী মিছিল করে নিহতদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি।’’
শুভেন্দু এ দিন ফের প্রশ্ন তুলেছেন, সনাতন ধর্ম, আদিবাসী এবং গোর্খাদের উৎসবের সময়ে কেন অধিবেশন ডাকা হল? একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা বয়কট করব না। মানুষ আমাদের বিধানসভায় পাঠিয়েছেন তাঁদের প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে সরব হওয়ার জন্য। এই সময়ে না করে একটু পিছিয়ে দিলে অধিবেশনকে আমরা আরও প্রাসঙ্গিক করে তুলতে পারতাম।’’ বিজেপি বিধায়কেরা আজ থেকে বিধানসভায় আসবেন না, এলাকায় থাকবেন। অধিবেশন চলতে পারে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। শুভেন্দু জানিয়েছেন, অধিবেশন চালু থাকলে ১৬ তারিখ থেকে তাঁরা আবার বিধানসভায় থাকতে পারেন। স্পিকার বিমানবাবু অবশ্য ফের বলেছেন, ‘‘উৎসবের সময়টা বাদে অধিবেশন যখন চলবে, আমি আবার বিরোধীদের আবেদন করছি তাঁরা সেখানে অংশগ্রহণ করুন। এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম।’’
নৌসর আলি কক্ষে এ দিন বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠকও করেছেন বিরোধী দলনেতা। বিজেপির বর্তমান বিধায়কদের মধ্যে দু’জন রাজ্যের বাইরে আছেন, বাকি ৬৮ জন বৈঠকে ছিলেন। তাঁদের সকলকে এ দিন বক্তব্য জানানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা তাঁদের বার্তা দিয়েছেন এলাকায় মাটি কামড়ে লড়াই চালানো এবং কোনও সমস্যা থাকলে দলীয় নেতৃত্বকে জানানোর।