দেবাশিস আচার্য। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
বিজেপি নেতারা মুখে বলছেন খুন। কিন্তু তমলুকের যুবক দেবাশিস আচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরেও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। মৃতের বাবা দেশবন্ধু আচার্য শুধু তমলুক থানায় লিখিত আবেদনে দাবি করেছেন, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে যেন ছেলের দেহের ময়নাতদন্ত হয় এবং গোটা পর্বের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়।
সেই মতোই শুক্রবার সকালে তমলুক হাসপাতালে দেবাশিসের দেহের ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। মর্গের বাইরে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। হাসপাতাল চত্বরে ছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা (তমলুক) সভানেত্রী শ্যামলী সিংহ-সহ দলের তমলুক শহরের নেতৃত্ব।
বুধবার গভীর রাতে কোলাঘাট থানার হলদিচক গ্রামের কাছে হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়কের ধারে পড়ে থাকা জখম দেবাশিকে উদ্ধার করে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি
করান জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। তমলুক শহরের পার্বতীপুরের বাসিন্দা দেবাশিসকে নিজেদের কর্মী দাবি করে খুনের অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। নিশানা তৃণমূলের দিকেই। তবে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানায়, দুর্ঘটনায় জখম হন দেবাশিস। সেই মতো অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলার তদন্ত হচ্ছে।
পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি কেন? বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা আইনজীবী নীলাঞ্জন অধিকারীর জবাব, ‘‘গোড়া থেকে পুলিশ অতি সক্রিয়। তা ছাড়া, দেবাশিসের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তাঁর পরিবারের লোকেরা এখনও অবগত নন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখেই তাঁরা আইনের পথে হাঁটবেন।’’ তবে ময়নাতদন্তেও দুর্ঘটনারই ইঙ্গিত মিলেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসেনি। তবে হাসপাতাল সুপারের থেকে প্রাথমিক পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনাতেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে।’’ তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র তাপসকুমার মাইতি বলছিলেন, ‘‘বিজেপি মিথ্যাচার করছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সত্য উদ্ঘাটন হবে।’’
ময়নাতদন্তের পরে দেবাশিসের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। হাসপাতালে এসেছিলেন মৃতের বাবা দেশবন্ধু। ৬ বছর আগে প্রকাশ্য মঞ্চে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর চড়াও হওয়ার পরেও ছেলের শাস্তি মকুব করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। দেশবন্ধু বলেন, ‘‘দিদির কাছে প্রার্থনা, আপনি তো প্রথমবারেও বাঁচিয়েছিলেন। আপনার উপর নির্ভর করেই এতদিন বেঁচেছিলাম। কিন্তু ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। অনুরোধ, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করুন। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্ত করে সত্যিটা জানা হোক।’’