শিলিগুড়ির সুকনায় বিনয় তামাং। রবিবার। ছবি: বিনোদ দাস
বিমল গুরুংকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাজ্য সরকারকেও পরোক্ষে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন বিনয় তামাং ও অনীত থাপারা।
সাড়ে তিন বছর পর ফিরে এসে বিমলের ক্ষমতা প্রমাণের পরীক্ষা। অন্যদিকে, বিমলকে ‘গুরুত্বহীন’ প্রমাণ করে বিনয়দের এখন পাহাড়ে টিকে থাকার লড়াই। ফলে একই দিনে দু’জনের সভায় যে পারস্পরিক আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ থাকবে সেটাই প্রত্যাশিত। সেটা করতে গিয়ে বিনয়রা রাজ্য সরকারকে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন, বিমল গুরুংকে তাঁরা কোনও ভাবেই পাহাড়ে মেনে নেবেন না।
রবিবার ডুয়ার্সের বীরপাড়ার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থেকে আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে হারানোর ডাক দেন বিমল। অন্যদিকে, সুকনার সভা থেকে বিনয়-অনীতেরা পাহাড়ের শান্তি বজায় রাখা নিয়ে মমতার ঘরেই বল ঠেলে দিয়েছেন। বিনয়কে বলতে শোনা যায়, ‘‘তিনবছর আগে, ২০১৭ সালে আমরা পাহাড়ের অশান্তির আগুন নিভিয়েছিলাম। আজ সবাইকে মনে রাখতে হবে, যাঁরা আগুন নেভাতে পারেন, তাঁরা আগুন জ্বালাতেও পারেন। ঘুমন্ত বাঘ জেগে উঠলে ঘাস নয় মাংস খাবে।’’ জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা সরাসরি বলেছেন, ‘‘আমি সরকারকে বলব, একটা খাপে দুটো খুকুরি রাখবেন না। তা হলে সমস্যা শুরু হয়ে যাবে। ২০১৭ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের উপর ভরসা করেছিলেন। আমরা গোর্খারা ওঁর উপর ভরসা আস্থা রেখেছি। উন্নয়নের কাজ হচ্ছে, এ বার আমাদের জাতিসত্তার দাবি নিয়ে আলোচনা করুন। বিমল গুরুং ২০২১ সালে সমর্থনের কথা বলেছে। আমি বলছি, আমাদের সমস্যা মেটান, আমরা সারা জীবন আপনার কাছে ঋণী থাকব।’’
আরও পড়ুন: আরএসএস দফতরে ফাইল হাতে প্রাক্তন ডিজি, সাক্ষাৎ ভাগবতের সঙ্গে
এই পরিস্থিতিতে আগামিদিনে পাহাড়ের ক্ষমতা দখলের লড়াই আরও তীব্র হবে তা বলাই বাহুল্য। ২১ অক্টোবর গুরুং প্রকাশ্যে আসার পর থেকে দুই তরফে টানাপড়েন চলছে। সেখানে রাজ্য সরকার গুরুংয়ের পাশে থাকায় তাঁরা যে কার্যত ক্ষুব্ধ তা এ দিন প্রকাশ্যে জানালেন বিনয়, অনীতেরা।
বীরপাড়ার সভা বিজেপিকে বিজেপিকে বিশ্বাসঘাতক, দাঙ্গাবাজ ও সাম্প্রদায়িক দল বলেও আক্রমণ করেন বিমল। তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী বীরপাড়ায় এসে বলেছিলেন, গোর্খাদের স্বপ্ন তাঁর স্বপ্ন। গোর্খাদের সমস্যা তাঁর সমস্যা। কিন্তু তিনি সেই আশ্বাস পূরণ করেননি।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যে ক্ষমতায় এলে ৭৫ লক্ষ চাকরি, প্রতিশ্রুতি বিজেপির, ‘ভাঁওতা’ বলছে তৃণমূল-বাম-কং
এ দিন সুকনায় বিনয়দের সভায় ভালই ভিড় হয়েছিল বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। বীরপাড়ায় বিমলের সভায় প্রথম দিকে তেমন জনসমাগম হয়নি। তবে বিমল মঞ্চে ওঠার পর ভিড় লক্ষ করা গিয়েছে। এ ব্যাপারে বিমল শিবিরের ব্যাখ্যা, বিমল যেহেতু এখন কোনও ক্ষমতায় নেই, তাই বিনয়ের মতো তাঁর পক্ষে এত লোক জোটানো স্বাভাবিক ভাবেই সম্ভব নয়।