গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজধানীর বহুচর্চিত বৈঠক শেষ। বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ পদাধিকারীদের অনেকেই দিল্লি ছেড়ে রাজ্যে ফিরেছেন ইতিমধ্যেই। কিন্তু অনেকে আবার এখনও দিল্লিতেই। এবং দিল্লিতে এই অতিরিক্ত কয়েকটা দিনের থেকে যাওয়া যে একেবারে অকারণে নয়, তা স্পষ্ট করে দিল এক মধ্যাহ্নভোজের আসর। বুধবার এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন হল। অন্তত আধ ডজন সাংসদ খাওয়া-দাওয়া সারলেন একসঙ্গে। এই মধ্যাহ্নভোজ নেহাৎই ‘মধ্যাহ্নভোজ’? নাকি কোনও স্পষ্ট অক্ষের আভাস? রসিকতার ঢঙে জবাব এড়ালেন স্বপন দাশগুপ্ত। আর একই দলের অনেকের একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করার মধ্যে কোনও ‘অস্বাভাবিকতা’ না দেখেও দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘‘এই লাঞ্চের ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।’’
গৃহকর্তা হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। আর তাঁর অতিথি রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, ব্যারাকপুরের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি অর্জুন সিংহ, বিষ্ণুপুরের সাংসদ তথা রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ, কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার-সহ আরও কয়েক জন। রাজ্য বিজেপির সহকারী সংগঠন সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী বা রাজ্য সম্পাদক সব্যসাচী দত্তরা জরুরি কাজে ইতিমধ্যেই দিল্লি ছেড়েছেন। না হলে বাবুলের বাংলোর ডাইনিং টেব্লে এ দিন তাঁদেরও দেখতে পাওয়া যেত বলে খবর।
এক সপ্তাহ ধরে বৈঠক চলেছে দিল্লিতে। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও সেখানে হাজির হননি বাবুল। দেখা যায়নি স্বপন দাশগুপ্তকেও। প্রথম জন দু’বারের সাংসদ, দু’দফার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। দ্বিতীয় জন তিন দশক ধরে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ, বর্তমানে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। এমন দু’জনকে দিল্লিতে আয়োজিত বঙ্গ বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে কেন এক বারের জন্যও দেখা গেল না? প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক শিবিরে। বাবুল বা স্বপন বার বারই জবাব এড়িয়েছেন। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সুব্রত চট্টোপাধ্যায়দেরও সে বিষয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। তবে যে দিন বৈঠক সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বলে বিজেপি সূত্রের খবর, সেই সোমবার সন্ধ্যায়ই বাবুল সুপ্রিয়র বাসভবনে হাজির হয়ে যান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন তিনি। রাজ্য দলের অন্দরমহলের পরিস্থিতি নিয়েই কৈলাস-বাবুলের কথা হয় বলে খবর।
আরও পড়ুন: প্রতীক্ষার শেষ, পাঁচ রাফাল ফাইটার ছুঁয়ে ফেলল ভারতের মাটি
দিল্লিতে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী বৈঠক কিন্তু মূলত সাংগঠনিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনার জন্যই ডাকা হয়েছিল। সে বৈঠকে স্বপন দাশগুপ্ত, বাবুল সুপ্রিয়দের যথোপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে ডাকা হয়নি, নাকি ডাক পেয়েও তাঁরা যাননি, তা নিয়ে কলকাতায় নানা রকম গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতিনিধি হিসেবে যাঁরা বাংলা সামলান, সেই শিব প্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বা অরবিন্দ মেননরা কোনও গুরুত্বপূর্ণ নেতাকেই যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বৃত্তের বাইরে রাখতে চাইছেন না, সে কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বাবুলের বাড়ি গিয়ে কৈলাস বৈঠক করায়। মত রাজ্য বিজেপির একটি অংশের।
বাবুল সুপ্রিয় বাড়ি গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় আলাদা করে বৈঠক করে আসায় জল্পনা বেড়েছে বিজেপির অন্দরে। —ফাইল চিত্র।
বঙ্গ বিজেপির বৈঠক দিল্লিতে কেন ডাকা হয়েছিল? বিজেপি সূত্রে প্রথমে জানানো হয়েছিল, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বও বাংলার নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে চান। প্রাক্তন সভাপতি অমিত শাহ, বর্তমান সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা এবং সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ এই বৈঠকে যোগ দিতে পারেন— এমনও শোনা গিয়েছিল প্রথমে। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ পদাধিকারীরাই সে কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাত দিনের বৈঠকে এক দিনও তাঁরা যোগ দেননি। এমনকি বঙ্গ বিজেপির যে সব হেভিওয়েট দিল্লিতে থাকেন, তাঁদের মুখও এ বৈঠকে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: আজ পূর্ণ লকডাউন, ২ দিন কমিয়ে অগস্টের ৭ দিনও
কেন এমনটা হল? পশ্চিমবঙ্গ থেকে এত জন সাংসদকে এবং বিভিন্ন স্তরের নেতাকে এই লকডাউনের মধ্যে দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হল, অথচ সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এক বারও রাজ্য দলের নেতাদের মুখোমুখি হলেন না। কেন এই ছবি তৈরি হল— প্রশ্ন তোলা হচ্ছে বিজেপির-ই একটা অংশ থেকে। শিব প্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননরা তো কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরই প্রতিনিধি— পাল্টা বলছে বিজেপির অন্য অংশ। কিন্তু তাতেও প্রশ্ন চাপা পড়ছে না। যুব মোর্চার এক প্রাক্তন পদাধিকারী বলছেন, ‘‘শিব প্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বা অরবিন্দ মেনন তো বাংলারই দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। তাঁদেরকে বঙ্গ বিজেপির অঙ্গ হিসেবেই ধরা হয়। বৈঠক কলকাতায় বসলেও তাঁরা থাকতেন। তাঁদের উপস্থিতিকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতি হিসেবে ধরা যায় না।’’
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে হাজির করা যাবে, এই পরিকল্পনা নিয়েই বৈঠকের আয়োজন দিল্লিতে হয়েছিল বলে দাবি বিজেপি সূত্রের। কিন্তু লাটিয়েন্স দিল্লির যে এলাকায় বৈঠকগুলো হল, দিলীপ ঘোষের সেই বাসভবন থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে বাড়ি বা অফিস হওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত শাহ, নড্ডা বা সন্তোষদের কেউই বৈঠকের দিকে যাননি। কেন যাননি? তাঁদের এই না যাওয়া নিয়ে এত গুঞ্জনই বা কেন? বিজেপির একটা অংশের দাবি— রাজ্য নেতৃত্বের একটা অংশ যে ভঙ্গিতে দল চালাতে চাইছেন, সে বিষয়ে নানা অভিযোগ অনেক দিন ধরেই জমা পড়ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। বৈঠক শুরু হওয়ার পরে উত্তাপ যে ক্রমশ বাড়ছিল, সে খবরও কেন্দ্রীয় নেতারা পাচ্ছিলেন। সেই কারণেই সর্বোচ্চ নেতৃত্ব এই বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন বলে একাধিক বিজেপি নেতা দাবি করছেন। এক যুবনেতার কথায়, ‘‘দিল্লিতে যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তাতে সকলকে উপযুক্ত গুরুত্ব দিয়ে ডাকা হয়নি। এমন কাউকে কাউকে তো একেবারেই ডাকা হয়নি, গোটা বৈঠকেই যাঁদের উপস্থিতি জরুরি ছিল। কেন্দ্রীয় নেতারা সব জানেন। তাঁরা এই বৈষম্যকে স্বীকৃতি দিতে চাননি। তাই বৈঠক এড়িয়ে গিয়েছেন।’’
তবে রাজ্য বিজেপির সামনের সারির মুখ যাঁরা, তাঁদের কেউই কিন্তু আর দিল্লির বৈঠক প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। যাঁরা মুখ খুলছেন, তাঁরাও মতানৈক্যের পর্বকে এখন যতটা সম্ভব লঘু করে দেখাতে চাইছেন। যে মন্ত্রীর বাংলোয় বুধবার আধ ডজন সাংসদকে জড়ো হতে দেখা গেল, সেই বাবুল সুপ্রিয় দলের অন্দরে মতানৈক্যের তত্ত্ব মানছেন। কিন্তু তাঁর দাবি, যা ঘটেছে, তার চেয়ে অনেক বড় করে দেখানো হচ্ছে বিষয়টাকে। এর নেপথ্যে তৃণমূলের হাত রয়েছে বলেও বাবুলের দাবি। তাঁর কথায়, ‘‘দিল্লিতে যে বৈঠক হয়ে গেল, তাতে আমি ছিলাম না। ফলে বৈঠকে কী হয়েছে, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে যদি মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেও থাকে, তা হলে সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। একটা এত বড় দলে নানা মত থাকতে পারে। তা নিয়ে তর্ক-বিতর্কও হতেই পারে।’’
বাবুল সুপ্রিয় এ দিন দাবি করেছেন, বঙ্গ বিজেপির অন্দরে বিভেদ এবং সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি করতে তৃণমূল সম্প্রতি সক্রিয় হয়েছে। কয়েক জনকে ‘দূত’ হিসেবে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিজেপি-কে ভাঙার চেষ্টা শুরু করেছিল বলেও বাবুলের দাবি। নাম না করলেও, তিনি যে প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কুণাল ঘোষের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, তা স্পষ্ট। মঙ্গলবারই তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র করা হয়েছে কুণালকে। সে প্রসঙ্গ টেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলছেন, ‘‘তৃণমূল কিছু মিথ্যা গল্প বাজারে খাওয়াচ্ছে। বিজেপির বৈঠকে হাতাহাতি হচ্ছে, মারামারি হচ্ছে বলে রটানোর চেষ্টা হচ্ছে। যাঁদের দিয়ে এই সব মারামারির গল্প খাওয়ানো হচ্ছিল, তাঁদের একজন তো তৃণমূলের মুখপাত্র পদও পেয়ে গেলেন। এর পরেও নিশ্চয়ই আর কিছু ভেঙে বলার দরকার পড়ে না।’’
মুকুল রায় বিজেপিতে থাকবেন, নাকি তৃণমূলে ফিরে যাবেন, তা নিয়ে বাংলার রাজনৈতিক শিবিরে কয়েক দিন প্রবল জল্পনা চলছিল। কুণাল ঘোষের সঙ্গে মুকুল রায়ের দু’টি বৈঠক জল্পনার সে আগুনে আরও অক্সিজেন জুগিয়েছিল। মুকুল রায় নিজে যদিও সে সব জল্পনা বার বার নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছিলেন। ‘‘কুণাল ঘোষকে কি আমি ডেকেছিলাম? নাকি তিনি নিজেই আমার বাড়িতে আসার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন?’’ এমন প্রশ্নও মুকুল রায় তুলেছিলেন। এখন মুকুল রায়ের সেই সুরই শোনা যাচ্ছে বিজেপির সামনের সারির অন্য নেতাদের গলাতেও। কুণাল ঘোষকে ব্যবহার করে বিজেপির অন্দরে তৃণমূল অশান্তির লাগানোর চেষ্টা করছিল বলে বিজেপির এই নেতাদের দাবি। কুণালকে দিয়ে অনেক ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল বলেও বিজেপির অভিযোগ।
মতান্তর থাকতে পারে, কিন্তু মনান্তর নেই— এই বার্তাই এখন দিতে চাইছে বিজেপি। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুধবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কেউ না কেউ তো রয়েছেনই এই সব অপপ্রচারের পিছনে। আমাদের অগ্রগতি কোনও ভাবে রুখতে পারছে না। পুলিশ দিয়ে অত্যাচার করেও পারছে না। তাই এখন এই সব খেলা শুরু করেছে। দলের মধ্যে তুমুল অশান্তি চলছে বলে রটানোর চেষ্টা হচ্ছে। অশান্তি লাগানোর জন্য কাউকে কাউকে ব্যবহারও করা হচ্ছে। কিন্তু এ ভাবে বিজেপির ক্ষতি করা যাবে না।’’ স্বপন দাশগুপ্তর মন্তব্যেও কটাক্ষ ঠাসা। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বুধবার বলেন, ‘‘আমি শুনলাম কুণাল ঘোষ তৃণমূলের মুখপাত্র নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আগেকার দিন হলে টেলিগ্রাম করে অভিনন্দন জানাতাম। এখন তো আর ও সব নেই। তাই টেলিগ্রাম করতে পারছি না। তবে তিনি যে তৃণমূলের হয়ে প্রকাশ্যেই আবার নামলেন, তাতে খুশিই হলাম। ভালই হল।’’
কুণাল নিজে অবশ্য এ সব তত্ত্বকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এ দিন। তাঁর কথায়, ‘‘এ সব সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। বিজেপির মধ্যে যা ঘটছে এবং যাঁরা ঘটাচ্ছেন, তাতে বাইরের কোনও প্রতিপক্ষ ওঁদের দরকার নেই।’’ শ্লেষের সুরে তিনি আরও বলেন, ‘‘একটা সর্বভারতীয় দলের এত দুর্দশা যে, কোনও এক ব্যক্তিবিশেষ কী খবর রটিয়ে দিল, তাতে দলে গোলমাল লেগে গেল, এটা দেখে খারাপ লাগছে।’’
নয়াদিল্লি সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলে চলতে থাকা ঝড় উদ্বিগ্ন করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। বৈঠকে তৈরি হওয়া মতানৈক্যের খবর সংবাদমাধ্যমে যে ভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তাতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। তাই দিল্লি অবিলম্বে পরিস্থিতির রাশ হাতে নিতে সক্রিয় হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। যে সব সমস্যা নিয়ে দলের অন্দরে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে, সে সবের সমাধান নিয়ে ভাবনা তো শুরু হয়েছেই। কোনও শিবিরের গুরুত্বই যে দলে কম নয়, সে বার্তাও স্পষ্ট ভাবে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর। বাবুল সুপ্রিয় বাড়ি গিয়ে কৈলাসের বৈঠক বা মুকুল রায়ের অসন্তোষ দ্রুত প্রশমিত করা সে সবেরই ইঙ্গিত বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরাও মনে করছেন।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই তৎপরতা কি পুরোপুরি মিটিয়ে ফেলেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরের সমস্যা? যদি সব মিটে গিয়েই থাকে, তা হলে বাবুল সুপ্রিয়র বাড়িতে এ দিন হঠাৎ মধ্যাহ্নভোজের আসর বসল কেন? সাংগঠনিক পদ দিয়েও ঠুঁটো করে রাখা হয়েছে বা নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রেও সংগঠন সাজানোর ক্ষমতা তাঁদের হাতে দেওয়া হচ্ছে না বলে যে সব সাংসদদের অভিযোগ, মূলত তাঁরাই বাবুলের বাড়িতে আমন্ত্রিত হলেন কেন? এ বিষয়ে বাবুল সুপ্রিয় নিজে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। আর সুকৌশলে জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন স্বপন দাশগুপ্ত। বাবুলের বাড়িতে বসে ফোনে স্বপনের মন্তব্য, ‘‘আমি তো শুধু খাব বলেই এসেছি। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয় এখনও খেতে দেননি। খুব খিদে পেয়ে গিয়েছে।’’
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই মধ্যাহ্নভোজ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন এ দিন। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কারও বাড়িতে লাঞ্চে যেতেই পারেন। দিল্লিতে অনেক দিন পরে সবাই এক জায়গায় হয়েছেন। তাই হয়তো এক দিন সবাই মিলে লাঞ্চ করছেন।’’ তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতে এ দিন যে মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ পেয়েছেন অনেকেই, সে কথা তিনি জানতেন না, বলেছেন দিলীপ ঘোষ।