ছবি: সংগৃহীত।
ফসলের খেতে অবশিষ্টাংশ বা নাড়া পোড়ানো রুখতে কয়েক মাস আগেই জেলা প্রশাসনগুলির কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছিল রাজ্যের পরিবেশ দফতর। কিন্তু সেই নির্দেশ কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশকর্মীদের অনেকেই। কারণ, শীতকালীন ফসল তোলার পরে বর্ধমান, বীরভূম-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নাড়া পোড়ানো চলছে। সেই ধোঁয়ায় শুধু যে এলাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে তা-ই নয়, পোড়া কার্বনকণা বায়ুপ্রবাহে ছড়িয়ে পড়ছে।
দিল্লির বায়ুদূষণের জন্য পঞ্জাব ও হরিয়ানার নাড়া পোড়ানোর ধোঁয়াকে দায়ী করেন পরিবেশ মন্ত্রকের কর্তারা। এ রাজ্যের বহু পরিবেশকর্মীর আশঙ্কা, এখানে যে-ভাবে নাড়া পোড়ানো বাড়ছে, তাতে কলকাতাতেও দিল্লির মতো পরিস্থিতি হতে পারে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নাড়া পোড়ানো যে আধিকারিকদের অগোচরে হচ্ছে, তা নয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘বায়ুদূষণ রুখতে হলে আমাদের নির্দেশ জেলা প্রশাসনকে পালন করতেই হবে।’’ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ব্যক্তিগত কাজে পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলা থেকে ফেরার পথে জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ফসলের খেতে নাড়া পোড়াতে দেখেন পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তাও।
আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রায় ২০০০ শূন্য পদে নিয়োগ
প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, নাড়া পোড়ানো রুখতে হলে আগুন জ্বলার সময়েই ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু অনেক সময় খবর মিলছে দেরিতে। অনেক ক্ষেত্রে কর্মীর অভাবও আছে। পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন সবুজ মঞ্চের সম্পাদক নব দত্তের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তো একাধিক আঞ্চলিক অফিস রয়েছে। তারাও সক্রিয় হচ্ছে না কেন?’’
ফসল কাটার পরে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফার চাষ শুরু হয়। ফলে চাষির হাতে ওই নাড়া তুলে জমি সাফ করার সময় থাকে না। নববাবু বলছেন, ‘‘ফসলের অবশিষ্টাংশ তোলার খরচ চাষি জোগাবেন কোথা থেকে? অনেক সময় তাঁরা ফসলের দামই ঠিকমতো পান না।’’ গত বছর রাজ্য সরকার আশ্বাস দিয়েছিল, ফসল কাটার যন্ত্র-গাড়ি কিনলে ভর্তুকি দিয়ে তাতে নিড়ানি লাগিয়ে দেবে প্রশাসন। তাতে ফসল কাটার সঙ্গে সঙ্গে গাছের অবশিষ্টাংশ উঠে আসবে। যদিও সেই জঞ্জাল চাষি কী করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ‘‘এ রাজ্যে বড় জোত নেই। ক’জন চাষি যন্ত্রচালিত গাড়ি দিয়ে ফসল কাটেন? তা হলে ওই পরিকল্পনার কোনও কার্যকারিতা আছে কি?’’ প্রশ্ন তুলছেন নববাবু।