বাজির মশলা সরবরাহের মূলচক্রী গ্রেফতার এসটিএফের হাতে। — ফাইল ছবি।
উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর এলাকায় নিষিদ্ধ বাজি সরবরাহ র্যাকেটের মূলচক্রীকে গ্রেফতার করল এসটিএফ। ধৃতের নাম মহম্মদ নজরুল ইসলাম। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতা বিমানবন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুলকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য দিকে, দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের নিচু স্তরের অবহেলা ছিল বলে শুক্রবার মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
এসটিএফ সূত্রে খবর, গত ২৯ অগস্ট উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি নিষিদ্ধ বাজি এবং বিস্ফোরক ভর্তি ১২ চাকার লরি বাজেয়াপ্ত করা হয়। গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে। এর পর আমডাঙা থানায় মামলা শুরু হয়। তদন্তভার হাতে নেয় এসটিএফ। তার পরেই বাজেয়াপ্ত হওয়া সামগ্রী পরিবহণের নীল নকশা বুঝতে পারেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানতে পারেন, কোনও এক জন রয়েছেন, যিনি গোটা সরবরাহ প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করেন। এসটিএফ খোঁজখবর করে জানতে পারে, বারাসত থানা এলাকার আক্রমপুরের বাসিন্দা মহম্মদ নজরুল ইসলামের নাম। এসটিএফ আরও জানতে পারে, নজরুল দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের পরেই এলাকা ছাড়েন। কিন্তু বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, মশলা যে পড়ে রয়েছে এলাকায়! এসটিএফ সূত্রে দাবি, বাজির মশলা সরাতে তাই একাধিক বড় বড় লরি ভাড়া করেন নজরুল। তার মধ্যেই বাজির মশলা ভরে পাচার করার ছক ছিল। এসটিএফ তার মধ্যে পাঁচটি ১২ চাকার লরি বাজেয়াপ্ত করে।
বাজির মশলা বাজেয়াপ্ত করার পর এসটিএফ নজরুলকে খুঁজতে শুরু করে। গোপন সূত্রে তদন্তকারীরা খবর পান, কলকাতা বিমানবন্দর এলাকায় নজরুলকে পাওয়া যাবে। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের কাছে ওত পেতে বসেছিলেন এসটিএফের তদন্তকারীরা। সন্ধ্যার একটু পরে নজরুল বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই তাঁকে পাকড়াও করে এসটিএফ। তাঁদের দাবি, নিষিদ্ধ বাজি সরবরাহ র্যাকেটের মূলচক্রী নজরুল। এসটিএফ সূত্রে খবর, শুক্রবারই নজরুলকে বারাসতের আদালতে হাজির করিয়ে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চাওয়া হবে। এসটিএফ মনে করছে, নজরুলকে জেরা করে বাজি শিল্পের ব্যাপারে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
অন্য দিকে, দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের তলার স্তরের দিকেই দায় ঠেললেন শাসকদলের সাংসদ সৌগত। খড়দহে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে দত্তপুকুর বিস্ফোরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বর্ষীয়ান সাংসদ বলেন, ‘‘দত্তপুকুরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। পুলিশের তলার স্তরে নিশ্চয়ই কোথাও অবহেলা ছিল। আশা করি, এর পরে এমনটা আর হবে না। মুখ্যমন্ত্রী তো নির্দেশ দিয়েছিলেন, সমস্ত বেআইনি বাজির কারখানা বার করো। তার পরেও ওটা রইল কী করে! এর তো কোনও জবাব দিতে পারেনি। তার ফলে ওখানকার আইসি এবং থানার ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিছু ব্যবস্থা হয়েছে, আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’