তখন পাড়ায় পাড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকত। তলার দিকে লেখা থাকত ‘সততার প্রতীক’। —ফাইল চিত্র।
কয়েক জন নেতার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর হোর্ডিং-ফ্লেক্সের তলায় ‘সততার প্রতীক’ লিখতে পারেন না। সেই কয়েক জনের উদাহরণ দিতে গিয়ে নিজেকেও ওই পংক্তিতে জুড়লেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। দিনহাটার বিধায়কের বক্তব্য উঠে এল নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে ‘স্বীকারোক্তি’ও।
রবিবার দিনহাটার চৌধুরীর হাট এলাকায় দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রিক সংখ্যালঘু কনভেনশনে বক্তৃতা করেন উদয়ন। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের মতো কিছু উদয়ন গুহ থাকার কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফ্লেক্সের নীচে ‘সততার প্রতীক’ লিখতে পারছেন না।
রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসন শেষে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসে মমতার তৃণমূল। তখন পাড়ায় পাড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকত। তলার দিকে লেখা থাকত ‘সততার প্রতীক’। সম্প্রতি সেই শব্দবন্ধ আর মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে দেখা যায় না। সে প্রসঙ্গে বিরোধীরা কটাক্ষ করে থাকেন। ওই বিষয়টি উঠে এল উদয়নের বক্তব্যে। নিয়োগ দুর্নীতি ইস্যুতে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল। সে কথা উঠে এল মন্ত্রীর কথায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা কাউকে চাকরি দেব বলে টাকা নিয়েছি। কাউকে ঘর দেব বলে টাকা নিয়েছি। এর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্নাম হচ্ছে।’’
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘শুদ্ধিকরণ’-এর বার্তা দিয়ে উদয়ন বলেন, ‘‘আমি টিকে থাকলে এই ধরনের লোকেরা পঞ্চায়েত নির্বাচনে সামনের সারিতে আসতে পারবে না। এর জন্য যদি আমাকে সব কিছু ছেড়ে দিতে হয়, আমি তাতেও রাজি। কিন্তু কোনও ভাবেই এদের সঙ্গে সমঝোতা করা হবে না। আমার নজরে এরা সমাজবিরোধী।’’
উদয়নের এই মন্তব্যের পর টিপ্পনী কাটতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের কথায়, ‘‘উদয়ন গুহকে স্বীকার করে নিতেই হচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাদ দিয়ে বাকি সবাই টাকা চুরি করেছেন। এখন প্রশ্ন, সেই টাকা গেল কোথায়?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মানুষ এঁদের প্রত্যেককে ধরে ধরে টাকার হিসেব নেবে। জনগণের হাত থেকে বাঁচতে তাই আগেভাগে সব স্বীকার করে নিতে শুরু করেছেন। আসলে চোরেদের দলের সঙ্গে মানুষ নেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তার জবাব পাওয়া যাবে।’’