রূপান্তরকামীদের জন্য বিল আনছে রাজ্য সরকার। ছবি: প্রতীকী
রূপান্তরকামীদের জন্য চাকরির দরজা খুলে দিল রাজ্য সরকার। খুব শীঘ্রই সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সাধারণ বিভাগে আবেদন করতে পারবেন রূপান্তরকামীরা। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে শুক্রবার সিলমোহর পড়েছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন।
শুক্রবার বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। জানা গিয়েছে, এ বার থেকে সরকারি চাকরিতে সাধারণ বিভাগে আবেদন করতে পারবেন রূপান্তরকামীরা। বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বাজেট অধিবেশনে এই সংক্রান্ত বিল আনা হবে। সেই বিল পাশ করিয়ে আইন এনে রূপান্তরকামীদের চাকরি দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘ট্রান্সজেন্ডার বোর্ড’-এর ভাইস চেয়ারপার্সন মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার রূপান্তরকামীদের জন্য প্রচুর ভাল কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যে খসড়া তৈরি হয়েছে, তা-ও রয়েছে আমার কাছে। শুধু চাকরি নয়, রূপান্তরকামীদের স্বাস্থ্য, ঋণ, পুনর্বাসন— সব বিষয়েই পদক্ষেপ করেছে সরকার।’’
রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন। ঐতিহাসিকও বটে।’’
২০১৪ সালে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। রূপান্তরকামীদের ‘তৃতীয় লিঙ্গ’-এর মর্যাদা দিয়েছিল। জানিয়েছিল, সংবিধানে নাগরিকদের জন্য যে মৌলিক অধিকারের উল্লেখ রয়েছে, তা তৃতীয় লিঙ্গের জন্যও প্রযোজ্য। শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য সংরক্ষণের কথাও বলে শীর্ষ আদালত। এর পর কর্নাটক সরকার পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে। মহারাষ্ট্রের আদালত সেই নির্দেশ দিয়েছে। এ রাজ্যের সরকার এ বার আইন এনে রূপান্তরকামীদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে চাইছে। আইন পাশ হলে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সাধারণ বিভাগে আবেদন করতে পারবেন তাঁরা।