সাংবাদিক সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্রদের মুখপাত্র। —নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্য পরিষেবা ও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে সন্ধ্যাবেলা সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার কযেক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করলেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকেই আলোচনায় যোগ দেওয়ার দাবি জানালেন তাঁরা। তবে এ আলোচনা নবান্নে কোনও ‘ক্লোজড ডোর’ মিটিংয়ে হবে না বলেই এ দিন স্পষ্টত জানান তাঁরা। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবি, ‘‘আমরা অপেক্ষায় আছি কাজে যোগ দেওয়ার ৫ দিন ধরে ওপিডি বন্ধ, এমন অবস্থা সত্যিই চলতে পারে না। অচলাবস্থা দ্রুত কাটুক আমরাও চাই। মাননীয়াও বলেছেন এ ভাবে চলতে পারে না, আমরাও মানছি এ ভাবে চলে না। আমরা তা চাই-ও না। কিন্তু ওঁর কাছে যা ইগোর লড়াই, আমাদের কাছে তা বাঁচার লড়াই।’’
কিন্তু তা হলে কবে থেকে শুরু হচ্ছে পরিষেবা? এর কোনও উত্তর ছিল না আন্দোলনকারীদের কাছে, বরং মুখ্যমন্ত্রী এনআরএসে এসে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না চালানো অবধি আন্দোলন জারি থাকবে বলেই তাঁরা জানান। এ দিন বিনীত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে আসতে বলে তাঁরা বলেন, ‘‘উনি এক হাত বাড়ালে আমরা দশ হাত বাড়াব। কিন্তু এই আন্দোলন এখন আর কেবল জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। শহর ছাড়িয়ে গ্রামের ছোট ছোট স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে সিনিয়র ডাক্তার, প্যারামেডিক্যাল কর্মী, নার্স সকলের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে। এই আন্দোলনে আমাদের কোনও নেতা বা কমিটি নেই। এটি স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। তাই কোনও প্রতিনিধি পাঠিয়ে ক্লোজড ডোর মিটিংয়ে বসা সম্ভব নয়।’’
এ দিন রাজ্যপালের সঙ্গে কথা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর দাবিকে একহাত নিয়ে তাংরা বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে তিনি বললেও রাজ্যপাল তা বিবৃতিতে অস্বীকার করেছেন ও ওঁকেই হাসপাতালে আসতে বলেছেন।’’
আরও পড়ুন: মানবিকতায় বিশ্বাস করি বলে এসমা জারি করিনি, ওরা বৈঠকে আসুক, নবান্নে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
ফের চিঠি রাজ্যপালের, জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে
এই ঘটনাকে ‘পেশাগত সমস্যা’ বলে মুখ্যমন্ত্রীর দেগে দেওয়া নিয়েও সরব হন তাঁরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের পেশাকে গুলিয়ে না ফেলতে অনুরোধ করেন। জানান, পুলিশরা অস্ত্রের মোকাবিলা করার প্রশিক্ষণ পান। আমরা কেবলই পড়াশোনা করে রোগ সারাতে পারি। তাই এই ধরনের দলগত আক্রমণ সামলানো কখনওই আমাদের পেশাগত সমস্যা নয়।
এ দিকে পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা নিয়েও এ দিন চিন্তিত ছিলেন তাঁরা। তার জ্ঞান ফিরলেও সে দৃষ্টির সমস্যা ও শর্ট টার্ম মোমোরি লসে ভুগছে বলে জানিয়েছেন। সার্জেন হতে চেয়েছিলেন পরিবহ। কিন্তু এই দুর্ঘটনায় তা কতটা সম্ভব সে নিয়েও এ দিন শঙ্কা প্রকাশ করেন আন্দোলনকারী ডাক্তাররা।
তবে মুখ্যমন্ত্রীকে বিবেচক ও তাঁদেরও বিচক্ষণ অভিভাবক হিসেবে ভূষিত করে আলোচনার পথ খোলা রাখার কথাই বার বার নানা কথাপ্রসঙ্গে জানালেন তাঁরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।