সম্মানজনক রাস্তার খোঁজে আন্দোলনকারীরা। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের ডাক ফিরিয়ে দেওয়া আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারেরা এ বার নিজেরাই রফাসূত্রের খোঁজে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, রবিবার ১০টার সময় তাঁরা জেনারেল বডি-র বৈঠকে বসবেন। এবং সেখানেই ঠিক করা হবে আন্দোলনের পরবর্তী গতিপথ। যদিও সূত্রের খবর, শনিবার রাত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর কিছুটা হলেও চাপে রয়েছেন আন্দোলনকারী ডাক্তারেরা। আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকেই উঠে আসছে রফাসূত্র বার করার দাবি। সূত্রের খবর, নিজেদের ঘোষিত অবস্থান থেকে সরে না গিয়ে, কী ভাবে একটি সম্মানজনক রাস্তা বার করা যায়, তার খোঁজেই আজ, রবিবার বৈঠকে বসবেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একাংশের ইঙ্গিত, জেনারেল বডি-র বৈঠকে একাধিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। তার মধ্যে রয়েছে, রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করার পরিকল্পনাও। অর্থাৎ আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা এ বার রাজ্যপালের দ্বারস্থও হতে পারেন। আন্দোলনকারীদের একাংশ স্বীকার করেন, এই অচলাবস্থার কারণে যে ভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে, তাতে তাঁদের আন্দোলন এত দিন যে সমর্থন পেয়েছে, সেই সমর্থনে ভাটা পড়তে পারে।
শনিবার রাত থেকেই আন্দোলনকারীদের সুরও ছিল কিছুটা নরম। তাঁরাও জানানোর চেষ্টা করছিলেন যে তাঁরা দ্রুত কাজে ফিরতে আগ্রহী। এবং তাঁরা স্বীকার করেন যে তাঁদের কর্মবিরতির জন্য সাধারণ মানুষের হয়রানি হচ্ছে। কিন্তু, এই মুহূর্তে আন্দোলনের স্বার্থে তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হঠার মতো পরিস্থিতিতেও নেই। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তাব গ্রহণ করার মতো রাস্তা খোলা নেই। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালই তাঁদের একমাত্র ভরসা। অন্য দিকে, শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পর রাজ্য সরকার স্পষ্টতই ধীরে চলো নীতিকে আঁকড়ে ধরেছে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান উড়িয়ে আন্দোলনে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশন (ডিএমই) প্রদীপ মিত্রর মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নবান্ন দফায় দফায় জানিয়েছে, তাঁদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে সব দাবিদাওয়া রয়েছে, তার সবটাই মেনে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের উপর হামলার ঘটনার তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। অভিযুক্তরা ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে। অর্থাৎ রাজ্য সরকার তাদের দিক থেকে যা যা করার, তা পালন করেছে। এবং তার পরে আন্দোলনকারীদের এই অনড় অবস্থান যে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকার ভাল চোখে দেখছে না, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের কাছে।
আরও পড়ুন: আন্দোলন এ বার ঔদ্ধত্যে পৌঁছচ্ছে
এই মুহূর্তে পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখা ছাড়া কোনও ধরনের নতুন পদক্ষেপ করতে আগ্রহী নয় রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, সেই সঙ্গে নবান্নর তরফে এই বার্তাও দেওয়া হয়েছে, যদি কোনও জুনিয়র চিকিৎসক কাজে যোগ দিতে চান, তা হলে তার পাশে থাকবে প্রশাসন। শনিবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন যে কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক বেশ কিছু জুনিয়র চিকিৎসক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে নবান্নে পৌঁছেছেন। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী অসত্য কথা বলছেন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে কেউ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাননি। তবে সূত্রের খবর, একটি রফাসূত্র বার করা যে প্রয়োজন, তা আন্দোলনকারীরাও বুঝতে পারছেন। এবং সেই কারণেই আজকের এই জরুরি বৈঠক।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদেরYouTube Channel - এ।