ছবি: সংগৃহীত।
এনআরএস-এ চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত হুমকি দিয়েছিলেন। আন্দোলন প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। বরং চিকিৎসকদের আন্দোলন আরও জোরদার হয়েছে।তাতে যোগ দিয়েছেন প্রবীণ চিকিৎসকদের পাশপাশি নার্সরাও।সেই সঙ্গে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে গণ-ইস্তফা দিতে শুরু করেছেন চিকিত্সকেরা। গোটা ঘটনায় রীতিমতো সঙ্কটে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা। এই আবহে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম আন্দোলনকারীদের কাছে আবেদন জানালেন, আলোচনার মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবার এই অচলাবস্থার সমাধানসূত্র বার করতে হবে। আন্দোলনকে আবেগ দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন পার্থবাবু। অন্য দিকে, রোগীমৃত্যু ঠেকাতে জরুরি পরিষেবা চালুর অনুরোধ জানালেন ফিরহাদ হাকিমের।
শুক্রবার পার্থবাবু ফেসবুকে আবেদন জানান, ‘ভুল বোঝাবুঝি’ সরিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের রাজ্য সরকারকে নিজেদের সমস্যার কথাগুলি জানাতে।ফিরহাদ হাকিম জানান, আন্দোলনকারীরা সরকারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। দুই নেতাই রাজ্যের রোগীদের স্বার্থে বিষয়টি বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আন্দোলনে আরও গতি, ১৭ জুন দেশ জুড়ে হাসপাতাল ধর্মঘটের ডাক দিল আইএমএ
আরও পড়ুন: ‘আপনি অভিভাবক, আপনাকে অবস্থান থেকে একটু সরে আসতেই হবে’, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আবেদন অপর্ণার
আন্দোলনকারীদের প্রতি পার্থবাবুর অনুরোধ, মানুষের সেবা যাতে হাসপাতালগুলিতে হয়, সে দিকটা দেখতে হবে।এ দিন তাঁর ফেসবুক পেজে পার্থবাবু লিখেছেন, ‘‘গোটা বিষয়টি আবেগ দিয়ে নয়, হৃদয় দিয়ে বিবেচনা করবেন, এই আশা রাখি।’’ জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি লিখেছেন, “তোমাদের নিরাপত্তার যেমন দরকার, তেমনই রোগগ্রস্ত মানুষ তোমাদের সেবায় ভাল হয়ে উঠবে, এটাই আমার প্রার্থনা।” জুনিয়র চিকিত্সকদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, মানুষের সেবায় তাঁদের নিযুক্ত হতে হবে।
আরও পড়ুন: সরকারি ডাক্তারদের গণইস্তফার ঢেউ, ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
আরও পড়ুন: বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক করতে কী ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য? রিপোর্ট চাইল হাইকোর্ট
পার্থবাবুর সুরই কার্যত শোনা গিয়েছে ফিরহাদ হাকিমের গলাতেও। স্বাস্থ্য পরিষেবার অচলাবস্থা কাটাতে তাঁর আবেদন, “আমি ডাক্তারবাবুদের কাছে আপিল করছি রোগীমৃত্যু ঠেকাতে ইমার্জেন্সিতে কাজ শুরু করতে।” তাঁর অনুরোধ, “সরকারের সঙ্গে কথাও বলতে পারেন তাঁরা।” তাঁর দাবি, “হাসপাতালে ডাক্তারবাবুদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী সিকিউরিটির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের কাছে অনুরোধ করেছেন, পরিষেবা দিন। আজকে আমিও তাঁদের সেই অনুরোধ করেছি।” ফিরহাদ হাকিমের কথায়, “যাঁরা ডাক্তারবাবুদের গায়ে হাত দেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির হোক, এটাই আমরা চাই।” আন্দোলনে রাজনৈতিক মদতের প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ঘোলাজলে মাছ ধরতে অনেকেই চেষ্টা করেন। আমি নিশ্চয়ই মানুষ হিসাবে প্ররোচনায় পা দেব না। ডাক্তারবাবুদের কাছে অনুরোধ, কাজ শুরু করুন। দয়া করে রোগীর সঙ্গে শত্রুতা করবেন না।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।