অধীর রঞ্জন চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের তিন শরিক তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস ও বামেরা বাংলায় হাত মেলালে আখেরে বিজেপিরই সুবিধা করে দেওয়া হবে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃত্ব। একই মত সিপিএমেরও। লোকসভা ভোটে বিজেপিকে রুখতে বাংলায় তৃণমূল, কংগ্রেস ও সিপিএম একসঙ্গে লড়তে পারে কি না, সেই জল্পনা চলছে কোনও কোনও মহলে। দিল্লির কিছু সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব ‘মহাজোট’ই চান। তবে যে সব ক্ষেত্রে মহাজোট শেষ পর্যন্ত সম্ভব হবে না, সেখানে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হতে পারে। কিন্তু বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, খণ্ড খণ্ড ভাবনা নিয়ে এ সবই এখন জল্পনা মাত্র। দলের রাজ্য নেতৃত্বের মত না নিয়ে এআইসিসি কোনও ভাবেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে না।
বিধান ভবনে মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানের পরে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘দেশে বিজেপিকে হারানো অবশ্যই জরুরি। কিন্তু বাংলায় কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বামফ্রন্ট মিলে কোনও সমঝোতা হলে তাতে বিজেপিরই শেষ পর্যন্ত লাভ হবে। বাম ও কংগ্রেসের তৃণমূল-বিরোধী ভোট তখন বিজেপির দিকেই চলে যেতে পারে। এই রকম সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি-বিরোধী জোট হয়েছে। কিন্তু কিছু রাজ্যের পরিস্থিতি আলাদা। সেখানে কী করণীয়, রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই এআইসিসি সিদ্ধান্ত নেবে।’’ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, বাংলায় দলের কৌশল বদলের কোনও আলোচনা এখনও কোথাও হয়নি। তৃণমূলের কাছে বাংলায় কোন কোন লোকসভা আসন বিধান ভবন দাবি করতে পারে, এই চর্চারও কোনও ভিত্তি নেই বলে কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য।
প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে এ দিন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রফেসর্স, টিচার্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র আয়োজনে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে ছিলেন চিকিৎসর কুণাল সরকার, শিক্ষক নার্গিস সাত্তার, মানিক দলুই প্রমুখ। প্রদীপবাবুও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফটকে রাজনৈতিক আন্দোলনের বদলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার উপরে জোর দিয়েছেন। অন্য দিকে, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও ফের উল্লেখ করেছেন, বাংলায় বিজেপি ও তৃণমূল, দু’দলের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে এককাট্টা করাই দলের লাইন। সেই কৌশল মেনেই ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থীকে কংগ্রেস সমর্থন করছে।