ফাইল চিত্র।
প্রথমে দুর্গাপুর। তার পর পিছু ধাওয়া করে বর্ধমান। আর সেখান থেকেই তামিলনাড়ুর থিরুভাল্লুর জেলার মিনজুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করল মুর্শিদাবাদের এক যুবককে। তামিলনাড়ুতে ওই যুবকের স্ত্রী খুন হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি। সে কারণেই তাঁর উপর সেখানকার পুলিশের সন্দেহ দৃঢ় হয়। ফোনের অবস্থান দেখে ধাওয়া করে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে তামিলনাড়ু নিয়ে যাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম শেখ মুদ্দাসর। মুর্শিদাবাদের কুঠিরামপুরে তাঁর বাড়ি। বুধবার দুপুরে বর্ধমান শহরের পুলিশ লাইন এলাকার একটি চায়ের দোকান থেকে তামিলনাড়ুর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। খুনের কথা ধৃত কবুল করেছেন বলে দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। তদন্তের প্রয়োজনে তাঁকে তামিলনাড়ু নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বলে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার এম ভেলুমানি। তামিলনাড়ু নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে বর্ধমানের আদালত।
পুলিশ জানিয়েছে, মুদ্দাসর দিনমজুরের কাজ করতে ওড়িশায় গিয়েছিলেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে মীনা নামে এক যুবতীর সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনিও দিনমজুরের কাজ করতেন। দু'জনের মধ্যে ভালেবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ে করেন তাঁরা। পরে মুদ্দাসর স্ত্রীকে নিয়ে তামিলনাড়ুতে চলে যান। তাঁদের মাস চারেকের একটি বাচ্চাও রয়েছে। তামিলনাড়ুর পুলিশ তদন্ত করে জেনেছে, মুদ্দাসর এবং মীনার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায়ই অশান্তি হত। স্ত্রীকে মাঝেমধ্যেই মারধর করতেন মুদ্দাসর।
মিজানুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার তামিলনাড়ুর অনুপমপাট স্টেশন এলাকার একটি পুকুর থেকে মীনার দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের গলায় সরু নাইলনের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো ছিল। তার পর পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, মীনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। এর পরেই মীনার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নামে মিনজুর থানার পুলিশ।
মীনার মৃত্যুর পর থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না মুদ্দাসরের। এটাই পুলিশের সন্দেহ বাড়িয়ে তোলে। তাঁর মোবাইলের অবস্থান বলছিল, পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকায় রয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার মিনজুর থানার পুলিশ সিটি সেন্টার এলাকায় হানা দেয়। পুলিশ পিছু নেওয়ার বিষয়টি কোনও ভাবে বুঝে যান তিনি। তার পর বর্ধমানে পালিয়ে আসেন। তাঁর পিছু নেয় মিনজুর থানার পুলিশ। তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘দু'জনের মধ্যে প্রায়শই অশান্তি হত। তবে কী কারণে খুন তা জানার জন্য ধৃতকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে হবে।’’