বর্ধমান স্টেশনে ট্যাঙ্ক ভেঙে দুর্ঘটনা। ছবি: উদিত সিংহ।
স্টেশনে জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ে স্ত্রীর মৃত্যুর জন্য রেলের গাফিলতিকে দায়ী করে বর্ধমান জিআরপিতে এফআইআর দায়ের করলেন স্বামী। বুধবার বর্ধমান স্টেশনে দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে মফিজা খাতুনের। তাঁর স্বামী আব্দুল মফিজ এই অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আব্দুল জানান, শ্যালিকার মেয়ে মেহেরুনিশা খাতুন দিল্লি যাচ্ছিলেন। তাঁকে রাজধানীতে তুলে দিতেই স্টেশনে গিয়েছিলেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী মফিজা। সঙ্গে মেয়েকেও নিয়ে গিয়েছিলেন। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেডের নীচে ট্রেনের অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। হাওড়া যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। সেই সময়েই শতাব্দী প্রাচীন জলের ট্যাঙ্কটি ভেঙে পড়ে শেডের উপর। জলের তোড়ে শেডটিও ভেঙে এই বিপত্তি ঘটে। দুর্ঘটনার পর তাঁদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি জানতে পারেন, মফিজা মারা গিয়েছেন।
আব্দুল বলেন, ‘‘বেলা ১২টা ২৫-এ ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার কথা ছিল। তার আগে ১২টার একটু পরেই জলের ট্যাঙ্কটি ভেঙে পড়ে। আমরা দু’জনেই জখম হই। আমাদের ছ’বছরের মেয়ে মেহতাজ শেখেরও পা-ও ভেঙে গিয়েছে। তবে মেহেরুনিশার কিছু হয়নি।’’
এই ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। নিহত ও আহত যাত্রীদের পরিবারের দাবি, ওই জলের ট্যাঙ্ক থেকে মাঝেমধ্যেই জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ত। এ ব্যাপারে রেলের কাছে অভিযোগও জানানো হয়। কিন্তু শুধু রং করেই ছেড়ে দেওয়া হত ট্যাঙ্কটি। ভেঙে পড়া ট্যাঙ্কটিকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, কিছু দিন আগেই সেটি রং করা হয়েছিল। কিন্তু কোথা থেকে কেন জল লিক করছে, তার পরীক্ষা করে মেরামত করা হয়নি। সঠিক ভাবে মেরামত হলে এই ঘটনা ঘটত না বলেই দাবি নিত্যযাত্রীদের একাংশের।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র অবশ্য জানিয়েছেন, কী কারণে ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ল, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিতে রাখা হয়েছে রেলের প্রবীণ তিন আধিকারিককে। তিন দিনের মধ্যে তাঁদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা।