—নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত ‘হটস্পট নয়, কিন্তু সংক্রমিত’, এই তালিকায় পশ্চিম বর্ধমানের নাম রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ‘লকডাউন’ সফল করার জন্য অন্য কয়েকটি জেলার সঙ্গে এই জেলাতেও বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেন। এই পরিস্থিতিতে পুলিশি তৎপরতা খানিকটা বেড়েছে বলে মত জেলার নানা প্রান্তের বাসিন্দাদের একাংশের। তবে তার পরেও শনিবার জেলার নানা প্রান্তে জনতার ভিড় কমেনি বলেই পর্যবেক্ষণ বাসিন্দা ও পুলিশ-কর্তাদের একাংশের।
দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের প্রধান অংশকে দু’ভাগে ভাগ করে একটি মাঠে আনাজ ও অন্য মাঠে মাছের বাজার বসানো হয়েছে। কিন্তু তার পরেও শনিবার দেখা গিয়েছে, বাজারে ভিড় কমেনি। দুর্গাপুর শহরের বাইরের কিছু গ্রামে, কাঁকসা, পানাগড়ের বাজারগুলিতেও কম-বেশি একই ছবি ছিল বলে অভিযোগ।
পাশাপাশি, একই অভিযোগ উঠেছে কাঁকসা, উখড়া-সহ নানা এলাকার ব্যাঙ্কগুলিতেও। শুক্রবারেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা তোলার জন্য ভিড় ছিল।
তবে পুলিশি সক্রিয়তা অনেকটাই বেড়েছে বলে মত জেলার বাসিন্দাদের। ‘লকডাউন’ কঠোর ভাবে মানা হচ্ছে বলে জানান আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশকুমার জৈন। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পাঁচটি সীমানায় আরও কড়া নজরদারি চলছে। ভিন্-রাজ্য থেকে আসা কাউকেই রাজ্যে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।’’ কমিশনারেট জানায়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য দোকান-বাজারগুলিতে নজর বাড়ানো হয়েছে। চলছে ধারাবাহিক জন-সচেতনতা প্রচারও।
কমিশনারেট জানিয়েছে, শনিবার-সহ গত কয়েক দিনে দুর্গাপুরে ‘লকডাউন’ অমান্য করার অভিযোগে শ’দেড়েক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এ দিন দেখা গিয়েছে, রাস্তায় মোটরবাইক বা গাড়ি নিয়ে ঘোরাঘুরি চলছে। বেনাচিতি বাজারের ঘোষ মার্কেট এলাকায় এ দিন সাইকেল, গাড়ি, মোটরবাইক নিয়ে যাওয়া বেশ কিছু মানুষকে পুলিশ কার্যত তাড়া করে সরিয়ে দেয়।
পুলিশ জানায়, কয়েকটি মোটরবাইক, একটি গাড়িকে আটক করা হয়। গাড়ির মালিক বিশ্বনাথ তলাপাত্র রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে কোথাও গিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁর গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করে। তিনি দাবি করেন, ‘‘চাল, আটা কিনতে গিয়েছিলাম।’’ পাশাপাশি, এ দিন পানাগড়ে কাঁকসা থানার ওসি অর্ণব গুহ দশ জন মোটরবাইক চালককে ‘মাস্ক’ বিলি করেছেন। অমিত চৌধুরী নামে এক মোটরবাইক চালক বলেন, ‘‘এখন থেকে বাইরে বেরোলেই মাস্ক পরব।’’ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, কড়াকড়িও চলছে। লকডাউন অমান্য করা চলবে না কিছুতেই।’’