প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে। নিজস্ব চিত্র
জলাশয়ে অনাদরে পড়ে থাকা কচুরিপানা থেকে নানা জিনিসপত্র তৈরি করে বিক্রির জন্য পরিকাঠামো তৈরিতে সরকারি উদ্যোগ শুরু হয়েছে। পূর্বস্থলী ১ ব্লকে সে জন্য গড়া হচ্ছে পরিকাঠামো। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে রাজ্যের ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প এবং বস্ত্র দফতর প্রায় ৪৬ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। ২ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমানে সভা করতে এসে প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন।
পূর্বস্থলীর এই এলাকায় বাঁশদহ বিল, চাঁদের বিল-সহ বেশ কিছু জলাশয় রয়েছে। বাঁশদহ বিলের পাড়ে প্রতি বছর খালবিল উৎসবের আগে সরাতে হয় কচুরিপানা। বিলের কচুরিপানা দিয়ে বড়কোবলা এলাকায় রাজু বাগ নামে এক যুবক ট্রে, ফল রাখার ঝুড়ি, ব্যাগ, ফুলদানি, টেবিলের ম্যাট-সহ নানা জিনিসপত্র তৈরি করেন। বিশ্বভারতী থেকে পড়াশোনা করা রাজুর তৈরি জিনিসপত্র দেখে ভাল লেগেছিল এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের। শিল্পী মন্ত্রীকে জানান, জল থেকে তোলার পর কচুরিপান প্রথমে কয়েক দিন শুকিয়ে নিয়ে তার পরে নির্দিষ্ট কিছু অংশ থেকে শৌখিন নানা জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। দেশ-বিদেশে এর ভাল বাজার রয়েছে বলেও দাবিকরেন তিনি। এর পরেই এলাকার স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই ধরনের কাজ করাতে উদ্যোগী হন মন্ত্রী।
‘খালবিল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র মাধ্যমে এলাকার ২০ জনকে কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় দীর্ঘদিন ধরে। তবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কচুরিপানা রাখার গুদাম, কাজের যায়গা এবং বিপণনের কাউন্টারের প্রয়োজন হয়। সরকারি উদ্যোগে পরিকাঠামো তৈরির জন্য জমির প্রয়োজন ছিল। নিজে অর্থ খরচ করে নিমতলা এলাকায় রাস্তার ধারে ২ কাঠা জমি কিনে দিতে উদ্যোগী হন মন্ত্রী।
রবিবার মন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকারি অর্থে কচুরিপানা রাখার জায়গা, শিল্পীদের কাজের জায়গা-সহ নানা পরিকাঠামো তৈরি হবে। ভবিষ্যতে এই শিল্পের মাধ্যমে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। আগে কচুরিপানা জল থেকে পারিশ্রমিক দিয়ে তোলাতে হত। আমাদের আশা, শীঘ্রই কচুরিপানা জল থেকে তোলার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যাবে।’’ তিনি জানান, কচুরিপানা থেকে কর্মসংস্থানে সরকারি উদ্যোগ রাজ্যে প্রথম। পূর্বস্থলীর শিল্পীদের তৈরি কচুরিপানা থেকে নানা জিনিসপত্র পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও।
পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিকের বক্তব্য, ‘‘এলাকায় যেহেতু এই কাঁচামাল সহজে মেলে, ফলে আগামী দিনে এই শিল্পের সঙ্গে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভবনা রয়েছে।’’