ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের অস্থায়ী শিবির। — নিজস্ব চিত্র।
দলের প্রতিষ্ঠা দিবসেই গোষ্ঠীকোন্দল ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল বর্ধমান জেলা বিজেপির দফতরে। বৃহস্পতিবার এক দল বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মী বর্ধমানের ঘোরদৌড়চটি এলাকার জেলা কার্যালয়ের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। গেটের সামনে শুরু হয় বিক্ষোভ। দলের কার্যালয়ের ভিতরে আটকে পড়েন জেলা যুব মোর্চার সভাপতি পিন্টু সাম-সহ অনেকে। এর পর তালা খোলা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বাগ্বিতণ্ডাও।
বিক্ষুব্ধরা তালা না খোলায় হাতুড়ি দিয়ে তালা ভেঙে দেন এক কর্মী। এর পর শুরু হয় হাতাহাতি। অভিযোগ, বিজেপি নেতা পিন্টুর নেতৃত্বে হাতুড়ি এবং লাঠি নিয়ে বিক্ষুব্ধদের দিকে তেড়ে যান এক দল কর্মী। এতে পিছু হটেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা। ভেঙে দেওয়া হয় বিক্ষুব্ধ কর্মীদের অস্থায়ী শিবির। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বর্ধমান থানার পুলিশ। এর পর স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
বিজেপির একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মাসখানেক আগে। বিজেপির বর্ধমান সদর জেলার সহ-সভাপতি শ্যামল রায়কে শোকজ় করার পর প্রকাশ্যে আসে দলীয় কোন্দল। তিনি বিষয়টি নিয়ে সমাজমাধ্যমে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। যা নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। এর পর বহিষ্কার করা হয় শ্যামলকে। সেই সূত্র ধরে পদত্যাগ করেন কয়েক জন নেতা, কর্মী এবং পদাধিকারী। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেই ক্ষোভ চরম আকার নেয়। এ নিয়ে যুব মোর্চার সভাপতি পিন্টু বলেন, ‘‘দলে থাকতে গেলে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। দলই ঠিক করে কে কোন পদে থাকবেন। তাই দলবিরোধী কোনও কাজ আমরা বরদাস্ত করব না।’’
বিজেপির দফতরের সামনে অবস্থানে বিক্ষুদ্ধ কর্মীরা। — নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে, বিক্ষুব্ধদের নেতা রাজু পাত্রের অভিযোগ, ‘‘অযোগ্য সভাপতি অভিজিৎ তা পুরোপুরি নিস্ক্রিয়। ফলে দলীয় যে কাজ তা ব্যাহত হচ্ছে। আন্দোলন গতি পাচ্ছে না।’’
বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দোপাধ্যায় অবশ্য এই সংঘর্ষের পিছনে ভিন্ন কারণ খুঁজে পেয়েছেন। তাঁর মতে, ‘‘এই ঘটনার পিছনে শাসকদলের হাত আছে। তাদেরই ফাঁদে পড়েছেন কয়েক জন কর্মী।’’
বিজেপির এই দলীয় কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি শাসকদল। তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘ওরা নিজেরাই নিজেদের দফতর ভাঙে। নিজেরাই তালা দেয়। ওরা আবার আমাদের সঙ্গে লড়াই করবে? আগে নিজেদের ঘর সামলাক।’’