—প্রতীকী ছবি।
হাত, পা ও মুখ বেঁধে কাকিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল ভাসুরপোর বিরুদ্ধে। শনিবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের কুরুম্বা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বীথিকা গড়াই নামে ওই বধূকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বধূর ভাসুরপো আশুতোষ গড়াই এবং তাঁর ছেলে পূর্ণচন্দ্র গড়াইকে গ্রেফতার করেছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।
বীথিকার খুড়তুতো দাদা সুবীর গড়াই জানান, বীথিকার বাড়ির পাশেই তাঁর বাড়ি। সকালে তিনি প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। সেই সময় বীথিকার বাড়ির কাছে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পান। বুঝতে পারেন, আওয়াজ আসলে খুড়তুতো বোনের বাড়ির উল্টো দিকে আশুতোষের বাড়ি থেকে আসছে। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, ওই বাড়িতে দগ্ধ অবস্থায় কাতরাচ্ছেন বীথিকা। তাঁর মুখ, হাত, পা বাঁধা রয়েছে। চারদিকে কেরোসিন তেলের গন্ধ। সুবীর বলেন, ‘‘আমি ওই দৃশ্য দেখে সত্যিই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তখনও বোনের জ্ঞান ছিল। এর পর আমিই প্রতিবেশীদের ডেকে এনে বোনকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। পুলিশেও খবর দিই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বীথিকার বাড়ির পশ্চিম দিকে একটি পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরের সামনে কিছুটা জায়গা নিয়ে আশুতোষের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ চলছিল। তা আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে। সেই বিবাদের কারণেই বাড়ির দেওয়ালের কিছু অংশ এখনও প্লাস্টার করতে পারেননি বীথিকা। সুবীর জানান, বীথিকার স্বামী নবকুমার গ়ড়াই একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। থাকেন বাইরে। গ্রামের বাড়িতে ছেলে সুরজকে নিয়ে থাকেন বীথিকা। সুবীরের দাবি, কয়েক দিন ধরে দেওয়াল প্লাস্টার করার কথা ভাবছিলেন বীথিকা। সেই রাগ থেকেই হয়তো বোনকে পুড়িয়ে মারা চেষ্টা করেছেন আশুতোষ। সুবীরের কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, বোন বাড়ির প্লাস্টারের কাজ করতে চলেছে, এটা কোনও ভাবে জেনে যায় আশুতোষরা। সেই জন্যই বোনকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে। ওরা যখন এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তখন সুরজও ঘুমাচ্ছিল।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে যান মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। অগ্নিদগ্ধ বধূকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কাটোয়ার এসডিপিও কৌশিক বসাক বলেন, ‘‘দু’জনকে গ্রেফতার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আর কারা জড়িত, জানার চেষ্টা করছি।’’