‘দিগম্বরী’ শুনিয়ে আরতি বনগ্রামে

করজগ্রাম পঞ্চায়েতের বনগ্রামে এই বাড়িতে পুজো হয় জাঁকজমকের সঙ্গে। বাড়ির সদস্যদের দাবি, এই পুজো সাতশো বছরের পুরনো। তাঁরা জানান, এই চট্টোপাধ্যায় পরিবারের আদি বাড়ি অগ্রদ্বীপে।

Advertisement

সুচন্দ্রা দে

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:৩০
Share:

দেবী বিদায় নেবেন। সেই বিরহে নবমীতেই ঢাক-ঢোল বাজিয়ে গাওয়া হয় ‘দিগম্বরী’। কাটোয়ার বনগ্রামের চট্টোপাধ্যায় পরিবারে এমন রীতি বহু বছরের।

Advertisement

করজগ্রাম পঞ্চায়েতের বনগ্রামে এই বাড়িতে পুজো হয় জাঁকজমকের সঙ্গে। বাড়ির সদস্যদের দাবি, এই পুজো সাতশো বছরের পুরনো। তাঁরা জানান, এই চট্টোপাধ্যায় পরিবারের আদি বাড়ি অগ্রদ্বীপে। দশ পুরুষ আগে বনগ্রামের বাসিন্দা কোনও এক কুমোর গৃহিণীর ভিক্ষাছেলে হিসেবে দুকড়ি চট্টোপাধ্যায় বনগ্রামে বসতি স্থাপন করেন। কুমোরদের গৃহদেবী ছিলেন দুর্গা। ক্রমে কুমোর বংশ লোপ পেলে চট্টোপাধ্যায় পরিবার পুজোর দায়িত্ব নেয়। প্রথমে খড়ের চালাঘরে পুজো শুরু হলেও এখন প্রায় হাজার বর্গফুটের একতলা মন্দিরে বছরভর দেবীর কাঠামোয় নিত্যসেবা হয়।

ষষ্ঠীর দিন বোধনের পরে সন্ধ্যায় আমন্ত্রণ, অধিবাস হয়। শাক্ত মতের পুজোয় চার দিনই নবপত্রিকা মাছভাজা ভোগ দেওয়া হয়। অষ্ঠমীর দিন দূরদূরান্ত থেকে ভক্তেরা আসেন। পুজোর প্রতিদিনই শ’তিনেক লোকের পাত পড়ে এই বাড়িতে। সন্ধিপুজোর পরে ভক্তদের জন্য থাকে খিচুড়ি প্রসাদ। শুধু ধূপ-ধুনোর আরতি নয়, দেবীকে শোনানো হয় ‘দিগম্বরী’— ‘মা গো, আমরা তোমার অবোধ ছেলে, কৈলাশেতে গেলে চলে, কেমন করে থাকবো মোরা?’ নবমীতে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে এই রকম গান গেয়ে পাশের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে যান চট্টোপাধ্যায় বাড়ির সদস্যেরা। বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির লোকজনও ঢোল বাজিয়ে চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে আসার পরে আরতি শুরু হয়।

Advertisement

পরিবারের সদস্য তারকনাথবাবু, দীনবন্ধুবাবুরা জানান, পুজোর খরচ চালাতে পুরনো হিসেবের খাতা আছে, যা ‘সাজার খাতা’ নামে পরিচিত। ঠাকুর গড়া, সাজ-সহ নানা খরচের জন্য ভক্তরাও অগ্রিম খরচ দেন। এখন ২০২৫ সাল পর্যন্ত ভক্তদের অগ্রিম বুকিং রয়েছে। এই পুজো ঘিরে মেতে ওঠেন পাশের গ্রামের বাসিন্দারাও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement