প্রশ্ন এ ধরনের ট্রাক্টর নিয়েই। নিজস্ব চিত্র
৯ জুলাই: আসানসোলে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে শীতলা মোড় লাগোয়া এলাকায় ইটবোঝাই ট্রাক্টরের সঙ্গে একটি গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। গাড়ির এক যাত্রী মারা যান। গাড়িতে সওয়ার তিন জন গুরুতর জখম হন। তদন্তকারীরা জানান, নিয়ম না মেনে ট্রাক্টরটি উল্টো দিকের লেনে ঢোকার সময়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
১৪ জুলাই: আসানসোলের কালীপাহাড়ি মোড়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি ট্রাক্টর মোটরবাইককে ধাক্কা মারলে জখম হন বাইক চালক। এ ক্ষেত্রেও পুলিশ জানায়, ট্রাক্টরটির চালক ডান-বাঁ দিক না দেখে মোড় পার হতে যাওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
১৫ জুলাই: বারাবনির নুনি পঞ্চায়েতের কালীধাওড়া গ্রামের রাস্তায় উল্টে যায় ইটবোঝাই ট্রাক্টর। ট্রাক্টরের ডালায় বসে থাকা এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানায়, ট্রাক্টরটি বিপজ্জনক গতিতে যাচ্ছিল। পিছনের চাকা একটি গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা জানান, তিনটি ক্ষেত্রেই প্রাথমিক তদন্তের পরে দেখা যাচ্ছে, ট্রাক্টর চালকের গাফিলতিতেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। ট্রাক্টরগুলি আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু চালক, খালাসিরা পালিয়ে যাওয়ায় খোঁজ মেলেনি। তবে ট্রাক্টরের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে চালক, খালাসিদের সন্ধান চলছে।
পাশাপাশি, বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আসানসোল-সহ জেলার নানা প্রান্তে যাতায়াত করা ট্রাক্টরগুলির বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই চালকের আসনে দেখা যাচ্ছে নাবালকদের। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের কাছে নেই ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স’।
কিন্তু ট্রাক্টরের রমরমা কেন, কারাই বা চালকের আসনে বসাচ্ছে নাবালকদের, সেই প্রশ্নও উঠেছে। ট্রাক্টর চালকদের একাংশের ব্যাখ্যা, ট্রাক, ডাম্পারের তুলনায় যে কোনও জায়গায় ট্রাক্টর নিয়ে যাওয়া সুবিধাজনক। যে নাবালকেরা ট্রাক্টর চালাচ্ছে, তারা কেউই পেশাদার চালক নয়। বিভিন্ন নির্মাণ শিল্পক্ষেত্র, ইটভাটা, বালি খাদান, পাথরকল প্রভৃতি জায়গায় কর্মরত এরা। এদের দিয়ে ট্রাক্টর চালাচ্ছেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। কারণ, তাতে ট্রাক্টর চালকের খরচও বেঁচে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সী বলেন, ‘‘মাঝে-মধ্যে ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্য রুখতে অভিযান হয়। কিন্তু লকডাউনের জেরে এই কাজে সামান্য ভাটা পড়েছে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই অভিযান শুরু হবে।’’