এ ভাবে স্কুলের সামনে ব্যানার টাঙাচ্ছে তৃণমূল। লাউদোহায়। নিজস্ব চিত্র
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়া-সহ তিনটি দাবিতে রাজ্য সরকারের কর্মী ও শিক্ষকদের একাংশ আজ, শুক্রবার ‘যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের’ ডাকে ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ধর্মঘট করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূলও।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া, যাঁরা ১০ মার্চ কর্মস্থলে আসবেন না, তাঁদের কাছে কারণ দর্শানোর বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হবে। যাঁরা তা গ্রহণ করবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্মস্থলে না আসার কারণ দর্শাতে না পারলে, অনুপস্থিত ধরা হবে এবং ‘সার্ভিস রেকর্ডে’ প্রভাব পড়বে।
এ দিকে, এ দিন দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ মিছিল করে। গান্ধী মোড় থেকে একটি এবং এডিডিএ ভবনের সামনে থেকে মিছিল বার হয়। মঞ্চের পক্ষে বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, “দলমত নির্বিশেষে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ধর্মঘটে শামিল হবেন। সরকারি দফতর, স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকবে।”
মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (এবিপিটিএ) পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষ, ‘১২ জুলাই কমিটি’র জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হীরক গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁরা কর্মস্থলে যাবেন না। বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানে বসবেন। জেলা জুড়ে মিছিল, পথসভা ও বিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন দফতরে গিয়ে কর্মচারীদের বিষয়টির গুরুত্ব বুঝিয়েছেন। হীরক বলেন, “এর আগেও বহু বার ধর্মঘট ভাঙতে একই রকম বিজ্ঞপ্তি সরকার জারি করলেও, তাতে সরকারের লাভ হয়নি।”
এর বিরোধিতা করে এ দিন বিকেলে লাউদোহায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে মিছিল করা হয়। ‘পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি’র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, “রাজ্য শিক্ষক ও পড়ুয়াদের পাশে সব সময় রয়েছে। তাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ডাকা ধর্মঘটের বিরোধিতা করে, পড়ুয়াদের স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষকদের স্কুলে গিয়ে পঠন-পাঠন ও মিড-ডে মিল চালু রাখার আর্জি জানানো হয়েছে।” তৃণমূল কংগ্রেস মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁদের সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ৬ মার্চ লিখিত ভাবে সংগঠনের সমস্ত সদস্যকে জানিয়েছেন, দাবি আদায়ের জন্য বিচারাধীন বিষয়ে অনৈতিক ভাবে ধর্মঘট ডেকে পড়ুয়াদের স্বার্থ বিঘ্নিত করা যাবে না। রাজীব জানান, তাঁরা সে ভাবেই প্রতিটি বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষকদের ধর্মঘটে শামিল না হওয়ার জন্য প্রচার করেছেন। তাঁর দাবি, তাঁরা বিদ্যালয় চালু রাখবেন। কাউকে জোর করে আসতে না দেওয়ার ঘটনা ঘটতে দেবেন না। সে সঙ্গে, এ দিন লাউদোহায় দেখা যায়, একটি স্কুলের গেটে ‘বাংলা বন্ধ ব্যর্থ করুন’, এই মর্মে ব্যানার টাঙাচ্ছেন তৃণমূল কর্মীরা।
ধর্মঘট প্রসঙ্গে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদ জানান, অর্থ দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, হাজিরা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পরে অর্থ দফতরের পরবর্তী নির্দেশ এলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।