কারখানার ৩ নম্বর গেটে অবস্থান তৃণমূলের। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানাকে কর্পোরেট করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবার কারখানার ৩ নম্বর গেটে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল তৃণমূল। ছিলেন বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। তবে এই কর্মসূচিতে যোগ দেয়নি কারখানার ১৩টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘সেভ সিএলডব্লিউ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’। কমিটির সদস্যেরা জানান, কারখানা বাঁচাতে তাঁরা যৌথ শ্রমিক আন্দোলনকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। কোনও একক কর্মসূচিতে থাকছেন না।
১৮ জুন চিত্তরঞ্জনের কারখানার জেনারেল ম্যানেজারের কাছে কারখানাকে কর্পোরেট করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে পরামর্শ চেয়েছে ভারতীয় রেল বোর্ড। এর পরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে কারখানার শ্রমিক সংগঠনগুলি। ১৩টি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ‘সেভ সিএলডব্লিউ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র তরফে টানা ধর্না, বিক্ষোভ, মিছিল করা হচ্ছে। তৃণমূলের তরফে আলাদা ভাবে অবস্থান-বিক্ষোভ করা হচ্ছে। দলের নেতাদের দাবি, এই কারখানায় তাঁদের কোনও শ্রমিক সংগঠন নেই। তাই জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটিতে দলের কোনও প্রতিনিধিও নেই। সে কারণেই পৃথক ভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তৃণমূলের এই যুক্তিতে আপত্তি জানিয়েছেন সেভ সিএলডব্লিউ জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির নেতারা। তাঁদের দাবি, পৃথক কর্মসূচি শ্রমিক আন্দোলনকে দুর্বল করতে পারে। কমিটির আহ্বায়ক সৌমেন দাসের বক্তব্য, ‘‘আমরা ঠিক করেছি, পৃথক কোনও রাজনৈতিক আন্দোলনে শামিল হব না।’’ আইএনটিইউসি নেতা নেপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কারখানা বাঁচাতে তৃণমূলের উদ্যোগকে সমর্থন করি। কিন্তু ওদের কর্মসূচিতে যোগ দেব না।’’ ‘ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’র জোনাল সম্পাদক স্বপন লাহা, সিটু নেতা রাজীব গুপ্তেরাও দাবি করেন, পৃথক আন্দোলন সমর্থনযোগ্য নয়। বারাবনির তৃণমূল বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘আমি মনে করি, আমাদের কর্মসূচি সাধারণ শ্রমিক-কর্মীদের দাবিকে মজবুত করবে। আমি নিজে জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির পাশে থেকে আন্দোলন করতে চাই।’’
জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ জুলাই রাতে তাঁরা শহর জুড়ে কালা দিবস পালন করবেন। সে দিন রাত ৮টা থেকে আধ ঘণ্টা রেল কলোনির কোনও আবাসনে আলো জ্বলবে না। আলো বন্ধ থাকবে কলোনি লাগোয়া সব ক’টি বাজারেও। ১১ অগস্ট একটি নাগরিক সম্মেলনের আয়োজনও হয়েছে। সে দিন রেলের কেন্দ্রীয় শ্রমিক নেতারা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। কমিটির আহ্বায়ক সৌমেনবাবু জানান, তাঁরা এই প্রতিবাদ আন্দোলন শুধু চিত্তরঞ্জনে সীমাবদ্ধ না রেখে আশপাশের শহরেও ছড়িয়ে দিতে চান।