বিক্ষোভের মুখে গলসির বিধায়ক। নিজস্ব ছবি।
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে গিয়ে দিকে দিকে বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কর্মসূচির চতুর্থ দিনেও তা অব্যাহত। রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ এবং দলের সাংসদ শতাব্দী রায়ের পর এ বার একই পরিস্থিতিতে পড়তে হল পূর্ব বর্ধমানের গলসির বিধায়ক নেপাল ঘোড়ুইকে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের জেরে গ্রামেই ঢুকতে পারেননি ওই তৃণমূল নেতা!
শনিবার গলসির কুরকুবা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে ‘দিদির দূত’ হিসাবে যান নেপাল। তাঁকে ঘিরে ধরে গ্রামবাসীদের দাবি, প্রকৃত গরিব হওয়া সত্ত্বেও এলাকার মানুষ আবাস যোজনার বাড়ি পাননি। এ ছাড়াও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রান্নার মান খারাপ, বেহাল রাস্তাঘাট, জলকষ্ট নিয়েও অনেকে অভিযোগ করেন। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘ভোটের পর থেকে আর এলাকায় দেখা যায়নি বিধায়ককে। একাধিক বার গ্রামের সমস্যার কথা জানালেও সুরাহা হয়নি।’’ দীপক দাস নামে এক বাসিন্দার কটাক্ষ, ‘‘শুধু ব্যানার আর পোস্টারেই দেখা যায় বিধায়ককে!’’ এলাকাবাসীর দাবি, বিক্ষোভের মুখে পড়ে আর গ্রামে ঢোকেননি বিধায়ক।
এই ঘটনায় শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিদির সুরক্ষা কবচের পরিবর্তে এখন তৃণমূল নেতাদের রক্ষাকবচ প্রয়োজন। এটা তো নতুন নয়। প্রতি দিনই এই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।’’ দলীয় কর্মসূচিতে ‘অশান্তি’র ঘটনায় অনেকে ‘গোষ্ঠীকোন্দল’-এর ছায়া দেখছেন। এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে স্থানীয় নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলার পরামর্শ দিলেও নেপাল তা মানেননি। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যদের না জানিয়ে কর্মসূচিতে যান বিধায়ক।
নেপাল অবশ্য ঝামেলার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও ঝামেলা বা অশান্তি হয়নি। গ্রামে গেলে এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হন। নিজেদের অভাব-অভিযোগ জানান।’’ তিনি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দাবিও মানতে চাননি। এ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েছি। মানুষ তো নিজেদের সমস্যার কথা বলবেন। ওখানে কোনও বিক্ষোভ হয়নি। একশো দিনের কাজ বন্ধ। সেটাই তাঁরা বিধায়ককে বলেছেন।’’