নিজস্ব চিত্র।
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিধায়ক। কিন্তু রাস্তা সারাই হয়নি। বর্ষায় সেই রাস্তা এখন কাদা-জলে ডুবে। ভোটের মুখে সেই রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হল বিধায়ককে! শনিবার দুপুরে ভোটপ্রচারে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। তাঁকে কাছে পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন এলাকার মানুষ। বিক্ষোভের জেরেই তিনি কাদা-জলে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন, এ কথা অবশ্য বিধায়ক স্বীকার করেননি। তাঁর বক্তব্য, ভোগান্তি বুঝতে তিনি নিজেই ওই রাস্তায় হেঁটেছেন! এই ঘটনা নিয়ে শাসকদল কটাক্ষ করতে ছাড়ছে বিরোধীরা।
সকালে ভাতারের নিত্যনন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালুত্তকে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী আব্দুল রউফের সমর্থনে প্রচারে বেরিয়েছিলেন মানগোবিন্দ। সেই সময়েই প্রার্থী ও বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় প্রার্থীকে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, বিধায়ককেও কাদা রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য করা হয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে রাস্তার হাল খারাপ। বিভিন্ন দফতরে বলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তাই বিধায়কের কাছে রাস্তার দাবি জানানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মজিউন বিবি বলেন, ‘‘সিপিএমের সময় রাস্তায় একবার অল্প মেরামত হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের সময় রাস্তায় কোনও কাজ হয়নি।’’ শাজাহান শেখও বলছেন, ‘‘বার বার খারাপ রাস্তার কথা পঞ্চায়েত ও বিধায়ককে বলা হলেও কোনও কাজ হয়নি। দিদির দূতের সময়েও বিধায়ক কথা দিয়েছিলেন রাস্তার কাজ হবে। কিন্তু কাজ হয়নি। ৬৬০ ফুট মাটির রাস্তা এখন কাদায় ভর্তি। হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে না। তাই বিধায়ককে কাদা রাস্তায় হাঁটিয়েছি আমরা।’’
এ প্রসঙ্গে মানগোবিন্দ বলেন, ‘‘শনিবার প্রচারে গেলে গ্রামবাসীরা খারাপ রাস্তার কথা বলে। আমি নিজেই রাস্তা দেখতে গিয়েছি এবং ওই রাস্তা হেঁটে পার হয়েছি। আমি তৃণমূলের বিধায়ক বলেই কাদা রাস্তায় হেঁটেছি।’’
এই ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করে জেলা বিজেপির সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘‘শুধু ভাতার নয়, গোটা রাজ্যেরই এই হাল। টাকা লুট হয়ে গিয়েছে। তাই বেহাল রাস্তার কোনও কাজ হয়নি। এলাকার বাসিন্দারা বিধায়ককে কাছে পেয়ে কাদা রাস্তায় হাঁটিয়েছেন। যোগ্য জবাব দিয়েছেন গ্রামবাসীরা।’’ পাল্টা রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিরোধীরা মিথ্যা কথা বলে ভোটের বাজার গরম করতে চাইছে। হাজার হাজার কিলোমিটার রাস্তা হয়েছে। ঝা-চকচককে রাস্তা হয়েছে তৃণমূলের আমলে। কোথাও রাস্তার কাজ চলছে। সবই হয়ে যাবে।’’