রমেশ বিধুড়ী। —ফাইল চিত্র।
আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা প্রার্থী বাছাইয়ে বৈঠকে বসলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটির সদস্যেরা। প্রথম তালিকায় দিল্লির ৭০টির মধ্যে ২৯টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল দল। সূত্রের মতে, বাকি ৪১টি আসনে কারা প্রার্থী হবেন, সেই তালিকা চূড়ান্ত হবে আজকের বৈঠকে। অধিকাংশ ভোটমুখী রাজ্যে দলাদলি এড়াতে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা এড়িয়ে গিয়েছেন মোদীরা। প্রশ্ন হল, দিল্লিতেও কি সেই সমীকরণ মানা হবে, না কি আপ-এর দাবি মতো বিতর্কিত রমেশ বিধুড়ীকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করবে বিজেপি!
প্রথম তালিকায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশীর বিরুদ্ধে কালকাজি কেন্দ্র থেকে বিধুড়ীকে টিকিট দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু প্রথমে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ও পরে অতিশী সম্পর্কে কুমন্তব্য করায় তাঁর টিকিট বাতিলের জল্পনা রয়েছে বিজেপির অন্দরে। বিশেষ করে অতিশীর মতো প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিধুড়ী কুকথা বলায় সার্বিক ভাবে দিল্লির মহিলা ভোটারদের উপর তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছে দল। ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস অলকা লাম্বাকে প্রার্থী করেছে। ওই লড়াই মহিলাদের মধ্যে যাতে সীমাবদ্ধ থাকে, সে জন্য বিধুড়ীর বদলে প্রাক্তন সাংসদ মীনাক্ষি লেখির নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
যদিও আজ সকালে বিজেপির দিল্লি নেতাদের নিয়ে যে কোর গ্রুপের বৈঠক হয়, তাতে বিধুড়ীকে সরানোর পক্ষে সায় দেননি দিল্লি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতাদের একাংশের মতে, নাম ঘোষণার পরে বিধুড়ীকে সরানো হলে ভুল বার্তা যাবে দল ও সমর্থকদের কাছে। তখন আপ দাবি করবে, তাদের চাপেই বিধুড়ীকে সরাতে বাধ্য হয়েছে বিজেপি। আবার দল এও মেনে নিচ্ছে, বিধুড়ীকে না সরালে বিজেপিকে ‘মহিলা-বিদ্বেষী’ হিসাবে তুলে ধরে প্রচারে নামবে আপ।
সব মিলিয়ে বিধুড়ীকে নিয়ে বিজেপির শাঁখের করাতের দশা। তা বুঝেই বিজেপির উপর চাপ বাড়াতে আজ অতিশী বলেন, ‘‘অতি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি, বিজেপি বিধুড়ীকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন আপনারাই বেছে নিন, কেজরীওয়ালের মতো শিক্ষিত নেতাকে চান, না কি বিধুড়ীর মতো নারী-সংখ্যালঘু-কৃষক বিদ্বেষীকে মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চান।’’ রাজনীতিকদের মতে, বিধুড়ী নিয়ে এই মন্তব্য করে আদতে বিজেপির উপর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করার চাপ বাড়িয়ে দিলেন অতিশীরা। বিজেপি এখন নাম ঘোষণা না করলে বিধুড়ীকেই ‘ছদ্ম মুখ্যমন্ত্রী’ হিসাবে তুলে ধরে প্রচারে নামবে আপ। তেমনটা হলে সামগ্রিক ভাবে বিজেপির ক্ষতি হবে বলেই মনে করছেন রাজনীতিকরা।
এই আবহে আজ সন্ধ্যায় বিজেপির সদর কার্যালয়ে ৪১ জনের প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে বৈঠকে বসেন মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা, রাজনাথ সিংহরা। তাৎপর্যপূর্ণ হল, দিল্লি নির্বাচনের প্রথম দফা নাম ঘোষণার আগে বৈঠকেই বসেনি কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। যা বিজেপির মতো দলের পক্ষে কিছুটা হলেও নজিরবিহীন। সূত্রের মতে, আজ সকালে কোর গ্রুপের বৈঠকে প্রতি কেন্দ্র পিছু তিনটি নাম নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সেই নামের মধ্যে থেকে কেন্দ্রপিছু একটি নাম বেছে নেওয়া হবে। আগামিকাল বা রবিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে।