বেফাঁস মন্তব্য করে বিপাকে তৃণমূলের নেতা। — নিজস্ব ছবি।
তৃণমূলের সভামঞ্চে জ্বলজ্বল করছে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। সেই মঞ্চ থেকেই গত পুরসভা ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য টিকিট কেনাবেচা হয়েছিল বলে প্রকাশ্যে দাবি করলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারি শহর তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ফারুক আবদুল্লা।
শনিবার বিকালে মেমারি শহর তৃণমূলের তরফে চকদিঘি মোড়ে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেই সভায় মেমারি শহর তৃণমূলের সভাপতি স্বপন ঘোষাল ছাড়াও ফারুক আবদুল্লা-সহ বেশ কয়েক জন নেতা উপস্থিত ছিলেন। ফারুক বক্তৃতা করতে উঠে আগাগোড়া নিজের দলের কাউন্সিলর ও এক নেতার বিরুদ্ধে সুর চড়ান। তিনি ওই কাউন্সিলরকে উদ্দেশ্য করেই বলেন, ‘‘১ কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা দিয়ে টিকিট কিনে তুমি কাউন্সিলর হয়েছ। তোমার নেতাও এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছে।’’
এ বিষয়ে বিশদ প্রতিক্রিয়ার জন্য পরে ফারুককে ফোন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। বলেন, “রাজনীতিতে সবই চলে। তাই আমি বলেছি। এর বাইরে আর কোনও কথা বলব না।’’ আর মেমারি শহর তৃণমূলের সভাপতি স্বপন ঘোষাল বলেন, “ফারুক যখন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠেন তখন আমিও মঞ্চে ছিলাম। একটু পর মঞ্চ থেকে নেমে যাই। তবে ফারুক তৃণমূলের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হওয়ার জন্য টিকিট কেনাবেচার যে কথা বলেছে সেটা আমিও শুনেছি। ফারুকের বক্তব্য আমি সমর্থন করি না। ফারুক দল সম্পর্কে সঠিক বলেননি।’’ বিষয়টি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বলে দাবি স্বপনের। তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, “এমন মন্তব্য দলবিরোধী। যিনি এ সব মন্তব্য করছেন তার দায় তাঁকেই নিতে হবে।’’
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির সহ সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূলের আসল স্বরূপ প্রকাশ্যে এনে দিয়েছেন ফারুক আবদুল্লা। টাকা ছাড়া তৃণমূলের কেউ কিছু বোঝে না। শুধু সরকারি প্রকল্প থেকে কাটমানি খাওয়া নয়, পুরসভা ভোট থেকে শুরু করে যে কোনও ভোটে তৃণমূলের প্রার্থী হতে হলে মোটা টাকা দিয়েই টিকিট কিনতে হয়।’’