Tree Plantation

গাছ লাগিয়ে পরিবেশ রক্ষার বার্তা শিক্ষকের

বিশেষত্ব হল, যে গাছগুলি অপ্রয়োজনে তুলে ফেলে দেওয়া হয় নানা জায়গায়, সেগুলিকেই তিনি ফের লাগিয়ে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০৩:৩৬
Share:

ফেলে দেওয়া গাছ এনে বাড়িতে বড় করছেন সুবীরবাবু (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

ধু-ধু প্রান্তর ছায়ায় ভরে উঠবে বলে গাছ লাগিয়ে চলেছেন পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডাল হাইস্কুলের শিক্ষক সুবীর মজুমদার। গত দেড় মাসে তিনি প্রায় ৫০টি গাছ লাগিয়েছেন। বিশেষত্ব হল, যে গাছগুলি অপ্রয়োজনে তুলে ফেলে দেওয়া হয় নানা জায়গায়, সেগুলিকেই তিনি ফের লাগিয়ে দেন।

Advertisement

শারীরশিক্ষার শিক্ষক সুবীরবাবুর বাড়ি অণ্ডালেই। তিনি জানান, চলার পথে বিভিন্ন সময়ে দেখতে পাওয়া যায়, নালার ধারে, বাড়ির আনাচে-কানাচে, বাগানে নিজে থেকেই বট ও অশ্বত্থ গাছের চারা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সামান্য বড় হলেই সেগুলি তুলে ফেলে দেওয়া হয়। সুবীরবাবু সেই সব গাছের চারা তুলে নিয়ে এসে পরম যত্নে বাড়িতে টবে লাগিয়ে দেন। সপ্তাহ খানেক যত্ন করতেই চারাগুলি সতেজ হয়ে ওঠে। পরে তিনি সেই গাছের চারা রোপণ করার ব্যবস্থা করেন অন্যত্র। কখনও রেল কলোনি, কখনও বা সিঙ্গারণ নদীর ধারে।

শুধু রোপণ করেই থেমে যান না সুবীরবাবু। গবাদি পশু যাতে গাছের ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেন গাছগুলি। তিনি বলেন, ‘‘দিনচারেক একটু নজরে রাখা আর একটু যত্ন করা। তা হলেই গাছগুলির রূপ বদলে যায়। তরতরিয়ে বাড়তে শুরু করে।’’ তিনি জানান, অণ্ডাল, বিশেষ করে রেল কলোনি রুখাসুখা এলাকা। গাছের সংখ্যা বেশ কম। স্বাভাবিক গাছ বলতে, অর্জুন, শিশু, নিম, কৃষ্ণচূড়া প্রভৃতি। এ ছাড়া, দেখা যায় কিছু বট ও অশ্বত্থ গাছ। আসলে এলাকায় জলের স্তর বেশ নীচে। গ্রীষ্মে অনেক সময়েই জলের সমস্যা দেখা দেয়। এলাকার ভূপ্রকৃতির কথা মাথায় রেখেই বট, অশ্বত্থ গাছ লাগানোর উপরে জোর দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘এমন গাছ লাগাতে হবে যা সহজে বড় হতে পারে।’’

Advertisement

সুবীরবাবুর কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে এসেছেন এলাকার কিছু ছেলে-মেয়ে। তাঁরাও বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছের চারা সুবীরবাবুকে এনে দেন। গাছ রোপণের সময় কোদাল, বালতি নিয়ে চলে আসেন তাঁরাও। কেউ আবার বাঁশ কেটে বেড়া তৈরির কাজেও হাত লাগান। প্রশান্ত রুইদাস, রোহিত লায়েক, অর্ক নন্দী, বর্ষা বাউরি, সোনালি বাউরি, প্রিয়া মণ্ডল’রা বলেন, ‘‘পরিবেশের কথা ভেবে এমন একটা কাজে যোগ দিতে পেরে ভাল লাগে।’’

সুবীরবাবুর কাজের প্রশংসা করেছেন ডিএফও (দুর্গাপুর) মিলনকান্তি মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। তাঁর যদি কোনওরকম সহযোগিতার প্রয়োজন হয়, আমরা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement