কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন। নিজস্ব চিত্র
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রেজিস্ট্রার’ ও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী থানায় অভিযোগ করায়, পাল্টা আইনি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার জানাল ওয়েবকুপা। আসানসোলের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং আধিকারিকদের আন্দোলনকে এ দিন সমর্থন জানিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্সঅ্যাসোসিয়েশন (জুটা)।
বৃহস্পতিবার নিয়ে টানা চার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও আধিকারিকেরা। অবস্থান মঞ্চে যোগ দেন ওয়েবকুপার জেলা সভাপতি বিরু রজক। তিনি বলেন, “এই আন্দোলনকে আমরা সমর্থন করছি। রেজিস্ট্রার ও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন উপাচার্য। আমরা পাল্টা আইনি পথে যাব।” আইনি পদক্ষেপের প্রক্রিয়া হিসেবে এ দিন আইনজীবীদের সঙ্গে ওয়েবকুপা নেতৃত্বের বৈঠক হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে গত কয়েক দিনের মতো এ দিনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি উপাচার্য।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থার জন্য উপাচার্যকেই দায়ী করে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে জুটা। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের বক্তব্য, “প্রায় সব ক্ষেত্রেই উপাচার্যের স্বৈরাচারী ও প্রতিহিংসামূলক মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি।”
যদিও উপাচার্য সাধন এ সব অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “শুনেছি আমার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধেরা নানা কুরুচিকর মন্তব্য লিখে পোস্টার সাঁটিয়েছেন। শিক্ষকদের কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না। আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন হতেই পারে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্দরে দেশের ভবিষ্যৎ তৈরির কারিগরেরা কুরুচির পরিচয় দেবেন কেন?” আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের অভিযোগে আমল দেননি।
উচ্চ মাধ্যমিক শেষে কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রস্তুতি, তা আন্দোলনের জেরে ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উপাচার্য। তাঁর কথায়, “এটা হলে সমস্যায় পড়বেন পড়ুয়ারা। উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য উচ্চ শিক্ষা দফতরে রিপোর্ট পাঠানোরসিদ্ধান্ত নিয়েছি।” যদিও উপাচার্যের এ মন্তব্যের সঙ্গে সহমত নন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রেজিস্ট্রার’ চন্দন কোনার। তাঁর কথায়, “বিক্ষোভ-অবস্থান চললেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে না। নতুন শিক্ষাবর্ষে আমরা পড়ুয়া ভর্তির যাবতীয় দায়িত্বই পালন করব।” পাশাপাশি, শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলছে। আন্দোলনের জেরে তাতে কোনও সমস্যা হয়নি।
গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার এমন পরিস্থিতি চলতে থাকায় জনমানসে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে সামগ্রিক ভাবে ভুল বার্তা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী কলেজ শিক্ষক সংগঠনওয়েবকুটার জেলা সম্পাদক চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্যা মেটাতে তিনি সরকারি হস্তক্ষেপের দাবিও জানিয়েছেন।