বর্ধমানে গণ্ডগোল। নিজস্ব চিত্র
বিক্ষিপ্ত গোলমালে ধর্মঘট মিটল পূর্ব বর্ধমানে। বর্ধমান শহরে দু’টি ও ভাতারে একটি গোলমালের ঘটনা ছাড়া, আর কোথাও তেমন কোনও অশান্তি হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে জেলার নানা প্রান্তেই রাস্তা অবরোধ, রেল অবরোধের চেষ্টা করেন ধর্মঘটের সমর্থকেরা। নানা জায়গা থেকে মোট জনা পনেরোকে আটক করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ধর্মঘট সফল না ব্যর্থ, সে নিয়ে দিনের শেষে চাপান-উতোর চলেছে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে।
ধর্মঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাস্তায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এ দিন সকাল সওয়া ৬টা নাগাদ পার্কাস রোডে দলের জেলা অফিস থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে সিপিএম একটি মিছিল বার করে। তাতে প্রায় আড়াইশো জন কর্মী-সমর্থক ছিলেন। জিটি রোড ধরে কার্জন গেটে পৌঁছে মিছিলটি মিনিট দশেক রাস্তা অবরোধ করে। কার্জন গেট থেকে বীরহাটা সেতুর দিকে যাওয়ার সময়ে ঢলদিঘি পেট্রল পাম্পে মিছিলে থাকা লোকজন গোলমাল পাকায় বলে অভিযোগ। পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। মিছিল পার্কাস রোডে ফেরার সময়ে একটি দোকান বন্ধ করা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে বামকর্মীদের। পরে পারাপুকুরের মোড়ে তৃণমূলের লোকজন সিপিএমের মিছিলকে তাড়া করে বলে অভিযোগ। পুলিশ মিছিলটি সুষ্ঠু ভাবে যাওয়ার পথ করে দেয়।
এ দিন স্কুল শুরুর সময়ে ধর্মঘটের সমর্থনে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের সামনে পোস্টার সাঁটাচ্ছিল এসএফআই। এসএফআইয়ের অভিযোগ, সেই সময়ে এক তৃণমূল নেতার কিছু অনুগামী এসে পোস্টারগুলি ছিঁড়ে দেয়। এক এসএফআই কর্মী প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধর করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে জিটি রোডের উপরে এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী প্রতিবাদ করতে গেলে কয়েকজন তাঁকে তাড়া করে রাস্তায় ফেলে মারধর করে বলে অভিযোগ। সংগঠনের জেলা সভাপতি বিশ্বরূপ হাজরার অভিযোগ, ‘‘আমাদের জেলা সম্পাদক মার খেলেন, আবার পুলিশ তাঁকেই আটক করে রাখল!’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এসএফআইয়ের পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছিল। বিকেলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল অবশ্য কোনও হামলা বা মারধরের কথা মানতে চায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতারে সিপিএমের অফিসের সামনে একটি ট্রাকের উপরে ধর্মঘট সমর্থকেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বাসের সামনের কাচ ভাঙা হয়। ট্রাকের চালকের শরীরের নানা অংশে কাচের টুকরো লাগায় তিনি জখম হন। এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।
ভাতার, পালশিট, খণ্ডঘোষের সগড়াই মোড়, খেজুরহাটি, রায়নার সেহেরা, মেমারিতে এ দিন পথ অবরোধ করে সিপিএম। সগড়াই মোড়ে সকাল সাড়ে ৬টা থেকেই রাস্তায় টায়ার জ্বেলে অবরোধ শুরু হয়। ঘণ্টা তিনেক ধরে অবরোধ চলায় ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কোনও বাস বর্ধমানের আলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়েনি। একই অবস্থা হয় নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডেও। গলসির বড়মুড়িয়া ও পুরসায় আগুন জ্বেলে অবরোধ করা হয় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে। দু’জায়গাতেই অবরোধ তুলে দেয় পুলিশ।