বার্নপুরের নিউটাউনে এই ধরনের অফিস নিয়ে সমস্যা। নিজস্ব চিত্র।
ইস্কোর জমি ও আবাসনগুলি দখলমুক্ত করার অভিযানে নেমেছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে আবাসন ও জমি ‘দখল’ করে গড়ে ওঠা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কার্যালয়গুলি তোলা নিয়ে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি সময় লাগবে, তবে সিদ্ধান্ত অবশ্যই কার্যকর হবে। এ দিকে, ‘অবৈধ ভাবে’ কার্যালয় তৈরির অভিযোগ তুলে তরজায় জড়িয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল।
সম্প্রতি নিউটাউন এলাকায় ইস্কো কারখানার জমি ও আবাসনগুলির দখলমুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে। ইস্কো কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই এলাকায় প্রায় ১৮৪টি আবাসন দখল করে বসবাস করছেন বহিরাগতেরা। তাঁরা কেউই ইস্কো আবাসন ব্যবহার করার অধিকারী নন। পাশাপাশি, আবাসন চত্বরে অব্যবহৃত ফাঁকা জমিতে রাজনৈতিক কার্যালয় গড়ে তোলারও অভিযোগ উঠেছে। সংস্থার শহর বিভাগের সিজিএম বিনোদ কুমার জানিয়েছেন, দখলমুক্ত করার জন্য ইস্পাত মন্ত্রকের সুস্পষ্ট নির্দেশ আসার পরে এই অভিযান শুরু হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, ইস্কোর সম্প্রসারণ প্রকল্পে আরও একটি নতুন ইউনিট তৈরির পথে। সে জন্য শ্রমিক-কর্মীদের আবাসন তৈরির প্রয়োজন। ফলে, জমি ও আবাসন দখলমুক্ত করা হচ্ছে।
কিন্তু সমস্যা দেখা গিয়েছে নিউটাউন অঞ্চলে জমি ও আবাসন ‘দখল’ করে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক কার্যলয়গুলিকে কেন্দ্র করে। নিউটাউনে প্রবেশের মূল রাস্তার খাটাল লাগোয়া এলাকায় গেল বিজেপি ও তৃণমূলের একাধিক কার্যালয় চোখে পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কোনওটি অব্যবহৃত ফাঁকা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে। কোনওটি আবার বিধায়কের কার্যালয়ের নামে আবাসন দখল করে তৈরি করা হয়েছে।
ইস্কো কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, সাধারণ বহিরাগতদের তুলে দিতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। অভিযান শুরু হতেই বহিরাগতেরা দখল সরিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আবাসন ও জমি দখল করে তৈরি হওয়া রাজনৈতিক দলগুলির কার্যালয়কে কেন্দ্র করে। অভিযোগ দলগুলির নেতা-কর্মীরা কোনও সহযোগিতা করছেন না। তবে, ইস্কোর শহর বিভাগের সিজিএম বিনোদ কুমার বলেন, “সময় লাগবে। সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।”
আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা বলেন, “দখল করে রাখার স্বভাব তৃণমূলের। এলাকায় গেলে ইস্কোর অব্যবহৃত জমিতে তৃণমূলের একাধিক কার্যালয় দেখা যাবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা অভিযোগ, “নিউটাউন এলাকায় বিজেপির কর্মীরা একাধিক আবাসন দখল করে বিধায়কের কার্যালয় নাম দিয়ে অপকর্ম চালাচ্ছেন।” তিনি বলেন, “ইস্কো কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা।” নরেন্দ্রনাথের দাবি, বিজেপির বিধায়ক বলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া উচিত নয়। নিয়ম প্রত্যেকের জন্য সমান। তবে, বিধায়ক অগ্নিমিত্রার সাফাই, এলাকার জনকল্যাণমূলক পরিষেবা দেওয়ার জন্য তৈরি হওয়া ‘বিধায়কের অফিস’ কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যালয় হয় না।