অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তরুণীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় দাঁইহাটের পুরপ্রধানকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো শুক্রবার কাটোয়া মহকুমা শাসকের দফতরে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে এলেন শিশিরকুমার মণ্ডল। পূর্ব বর্ধমানে শাসক দলের জেলা নেতৃত্বকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শুক্রবার বেলা ১২টার মধ্যে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যেতে হবে শিশিরকে। বলে দেওয়া হয়েছিল, নির্দেশের অন্যথা হলে কড়া পদক্ষেপ করবে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। দলীয় সূত্রে খবর, শীর্ষ নেতৃত্বের সেই নির্দেশ মেনে বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যেই শিশির পদত্যাগ করেছেন। মহকুমা শাসকের দফতর থেকে বেরিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি নির্দোষ। আমায় ফাঁসানো হয়েছে। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
শিশিরের বিরুদ্ধে এক তরুণীকে চাকরির লোভ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি। নেটমাধ্যমে সেই সংক্রান্ত একটি অডিয়ো ক্লিপও ছড়িয়ে পড়ে। অডিয়ো ক্লিপটির সত্যাসত্য অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করে দেখেনি। ওই অডিয়ো ক্লিপে শোনা গিয়েছে, এক তরুণী ‘কাকা’ বলে এক জনকে সম্বোধন করে চাকরির আবেদন করছেন। যাকে ‘কাকা’ বলে সম্বোধন করা হচ্ছে, তিনি দাঁইহাটের চেয়ারম্যান বলে দাবি করেন তরুণী। তাঁর অভিয়োগ, পরে ‘কাকা’ তাঁকে বার বার ফোন এবং ভিডিয়ো কল করা শুরু করেন। পুজোর আগে একটি লজে ডেকে শারীরিক সম্পর্কের বিনিময়ে চাকরি ও টাকা দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
ওই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আসার পরেই বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে নির্দেশ যায়, শিশিরকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবারই সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান শিশিরকুমার মণ্ডলের যে অডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সংবাদমাধ্যমে, তার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শিশিরবাবুকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। উনি পদত্যাগ করবেন। পরে যদি ওই অডিয়ো ক্লিপ মিথ্যে প্রমাণিত হয়, তখন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা যাবে।’’
শিশির অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, তিনি ওই মহিলাকে চেনেন না। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি ওই মহিলাকে চিনিই না। এখন ডিজিটাল যুগ। আমার গলা ও ছবি নকল করে ওই ভিডিয়ো ছড়ানো হয়েছে।’’ যদিও শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মতো পদত্যাগ করবেন বলেও জানিয়েছিলেন শিশির।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শিশির পদত্যাগ করার পর পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেন রবীন্দ্রনাথ। পরে সেই বৈঠকে শিশিরও যোগ দেন। জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব পরবর্তীতে যা সিদ্ধান্ত নেবেন, যেমন যেমন করতে বলবেন, আমরা সেটাই মেনে চলব।’’