একটি গুলি গাড়ির জানলার কাচে লাগে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীর। —নিজস্ব চিত্র।
জমি মাফিয়াদের মধ্যে অশান্তির জেরে গুলি চলার অভিযোগ আসানসোলে। ব্যবসায়ীকে ছোড়া গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে লাগল গাড়িতে। যদিও হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। প্রথমে গুলি চলার ঘটনা অস্বীকার করলেও পরে গাড়ির কাচে চিহ্ন দেখে তদন্ত শুরু করল আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।
সোমবার দুপুরে আসানসোল উত্তর থানার বাবা চন্দ্রচূড় মন্দির এলাকায় ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন দীনেশ গড়াই নামে এক ব্যবসায়ী। অভিযোগ, আচমকা তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় মোটরবাইকে আসা এক দল দুষ্কৃতী। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান ব্যবসায়ী। দীনেশের দাবি, একটি গুলি তাঁর গাড়িতে লাগে। দূষ্কৃতীরা কমপক্ষে তিন-চার রাউন্ড গুলি চালায় বলে দাবি করেন তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। ওই জায়গায় যান আসানসোল পুরনিগমের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা আসানসোল উত্তর ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি অর্জুন মাজি। তিনি বলেন, ‘‘কেন এই ভাবে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটল, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওই এলাকায় জোর করে জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে। মনে হচ্ছে, এই জমি দখল করে নেওয়ার সঙ্গে গুলি চালানোর ঘটনার যোগ রয়েছে। জমি মাফিয়ারাই এই গুলি চালিয়েছে।’’ অন্য দিকে, ডিসি সেন্ট্রাল কুলদীপ সোনেওয়ান বলেন, ‘‘জমি সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে অশান্তি হয়েছে। গুলি চলেছে কি না আমার জানা নেই। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
যে হোটেলের সামনে এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরায় দুষ্কৃতীদের ছবি ধরা পড়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যে ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। দূষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ওই ব্যবসায়ী জানান, আসানসোল উত্তর থানার ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কে চন্দ্রচূড় মোড়ের কাছে একটি হোটেলে তিনি গাড়ি নিয়ে খাবার কিনতে এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে এক সঙ্গী ছিলেন। খাবার নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়েন তিনি। ব্যবসায়ী যখন বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁর গাড়ির সামনে বেশ কয়েক’টি মোটরবাইক এসে দাঁড়িয়ে পড়ে। কিন্তু চালক গাড়ি না থামানোয়, মোটরবাইকে আসা দূষ্কৃতীরা গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তার পরেও চালক গাড়ি না থামিয়ে পালিয়ে যান। তাই বিপদ এড়াতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে শক্তিগড় এবং জামুড়িয়ায় জাতীয় সড়কে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুও হয়েছে। বার বার কেন জাতীয় সড়কে এই ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়েরা। তবে ডিসি সেন্ট্রাল কুলদীপ সোনেওয়ান বলছেন, ‘‘গুলি চালানোর স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গাড়িতে গুলি লেগেছে বলে দীনেশ যে দাবি করছেন, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’