পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জখমরা। নিজস্ব চিত্র
গ্রামের বাঁধ সংস্কারকে কেন্দ্র করে দু’টি পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধল। বৃহস্পতিবার বিকেলে কাঁকসার আমলাজোড়ার আনন্দপুর গ্রামের ঘটনা। সংঘর্ষে দু’পক্ষের ৩০ জন জখম হয়েছেন বলে দাবি। চোট পেয়েছেন আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হারু বাগদিও। তাঁকে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকি আহতদের পানাগড় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানো হয়। স্থানীয় সূত্রে দাবি, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্ব’ আদতে প্রকাশ্যে এল। যদিও সে কথা মানেননি তৃণমূল নেতারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আনন্দপুর গ্রামে প্রায় ৬০ বিঘা একটি বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এক ঠিকাদার সে কাজের জন্য বরাতও পেয়েছেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় সে বাঁধের কাজ শুরু করা নিয়ে। গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আইনুল হক নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করাতে চাইছেন। আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হারু বাগদিরও অভিযোগ, “প্রাক্তন প্রধান আইনুল আগে বাঁধ সংস্কারের কোনও হিসাব গ্রামবাসীকে দেননি। তাই নতুন কাজের বিষয়ে গ্রামবাসী যাতে সব জানতে পারেন, সে জন্য একটি কমিটি গড়ার কথা বলি। কিন্তু কোনও কথা না শুনে, এ দিন পাম্পের সাহায্যে পুকুরের জল বার করা হচ্ছিল।”
এ কাজের খবর জানাজানি হতেই গ্রামবাসীর একাংশ ঘটনাস্থলে যান। সে সময়ে, তাঁদের উপরে দলবল নিয়ে আইনুল চড়াও হন বলে অভিযোগ হারুর। জখম গ্রামবাসী শ্যামাপদ রুইদাস বলেন, “আমরা সকলেই তৃণমূল করি। কিন্তু প্রাক্তন প্রধান আইনুল আমাদের উপরে হামলা চালান।” অভিযোগ অস্বীকার করে, সিরাজুল মোল্লা নামে এক গ্রামবাসীর পাল্টা দাবি, “এ দিন হারুই দলবল নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালান। আমাদের কয়েক জন জখম হয়েছেন।” আইনুলেরও দাবি, “উপপ্রধান লোকজন এনে সরকারি কাজে বাধা দিচ্ছিলেন। ওঁরা আমাদের
মারধর করেন।”
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কাঁকসা থানার পুলিশ। আসেন ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত, এসিপি (কাঁকসা) শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ডিসি বলেন, “প্রাক্তন প্রধান ও উপপ্রধানের মধ্যে গোলমালের জেরে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।”
এ দিকে, বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, “চতুর্দিকেই বখরা নিয়ে তৃণমূল নিজেদের মধ্যে অশান্তি, মারামারি করছে। এ ঘটনা তারই প্রমাণ।” অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সী বলেন, “দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কথা বলে, সমস্যার সমাধান করা হবে।”