প্রতীকী ছবি
বছর দু’য়েক আগে চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে বার্নপুরের কালাঝরিয়ায় ইস্কো বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল শুরু করা যায়নি এ পর্যন্ত। বিমানবন্দরের নিরাপত্তার প্রশ্নে প্রধান সমস্যা হল শতাধিক বড় গাছ, একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি, একটি মোবাইল টাওয়ার। এগুলির ব্যবস্থা করা না হলে বিমান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে মহকুমা প্রশাসন ও ইস্কোকে জানায় ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া’ (এএআই)। সমস্যা দূর করতে মঙ্গলবার বিকেলে ইস্কো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন মহকুমাশাসক (আসানসোল) দেবজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিমানবন্দরটির পুনর্নির্মাণ করে সেখান থেকে বাণিজ্যিক ভাবে আঞ্চলিক বিমান পরিষেবা শুরু করা হবে বলে জানায় মহকুমা প্রশাসন। এ বিষয়ে ২০১৬-র মাঝামাঝি ইস্কোর সঙ্গে এএআই-এর চুক্তি হয়। মঙ্গলবার বৈঠকের পরে মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ ভালই হয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে বন্দর লাগোয়া একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে হবে। কিছু বড় গাছ কাটতে হবে। এএআই-এর বলা এই দু’টি বিষয় ইস্কো কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমরাও প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ করছি।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুতের খুঁটিগুলি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা পদক্ষেপ করছে। খুঁটিগুলি স্থানান্তরিত করার জন্য জমিও চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু গাছ কাটা, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে ইস্কো। মহকুমা প্রশাসন জানায়, গাছগুলি যে জমিতে, সেগুলির মালিকদের নামের তালিকা ইস্কো-কে দেওয়া হয়েছে। মালিকদের নাম ধরে ক্ষতিপূরণ-সহ গাছ কাটার বিজ্ঞপ্তি দেবে ইস্কো। বিজ্ঞপ্তি জারির পরে আপত্তি থাকলে সে কথা জমি মালিকেরা ইস্কো-কে জানাতে পারবেন। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধান সূত্র বার করা হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে করার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক। মোবাইল টাওয়ারটি সরানোর বিষয়েও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে মহকুমা প্রশাসন।
বার্নপুর ইস্কোর টাউন বিভাগের আধিকারিক ভাস্কর কুমার বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইস্কো-র তরফে নির্দিষ্ট করে দেওয়া কাজগুলি দ্রুত শেষ করে উড়ান চালুর জন্য পদক্ষেপ করা হবে।’’
ইস্কো জানায়, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘রিজিওনাল কানেকটিভিটি উড়ান স্কিম’-এর (আরসিইউসি) অধীনে উড়ান-পরিষেবা চালু হওয়ার কথা। শুরুতে বার্নপুর থেকে কলকাতা, পরে রৌরকেল্লা ও জামশেদপুর পর্যন্ত উড়ান চলাচলের কথা রয়েছে। এর জন্য ২০১৭-র থেকেই ১,২০০ মিটার রানওয়ে তৈরি, বন্দরের চারপাশে পাঁচিল দেওয়া, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রী প্রতীক্ষালয় এবং বিমান রাখার হ্যাঙ্গার-সহ নানা পরিকাঠামো তৈরির কাজ হয়েছে। বিমানবন্দরের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ভার ইস্কো-র। বিমান পরিষেবার যাবতীয় দায়িত্ব এএআই-এর। বন্দরের রক্ষী মোতায়েন, অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার।