উপড়ে গিয়েছে বিশ্ব বাংলা লোগো। —নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের কর্মসূচি ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বর্ধমান শহরে। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সঙ্ঘাতে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকা। বিশ্ব বাংলার লোগো উপড়ে ফেললেন সিপিএমকর্মীরা। পাশাপাশি, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দু’পক্ষের কয়েক জন জখম হয়েছেন।
বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএমের ডাকে জেলাশাসকের কাছে ‘আইন অমান্য’ কর্মসূচি শুরু হয় বুধবার বিকেলে। সকাল থেকে দু’টি বড় সমাবেশের মধ্য দিয়ে সিপিএমের ওই কর্মসূচি শুরু হয়। বর্ধমানের বড়নীলপুর মোড় এবং স্টেশনে করা হয় দু’টি সভা। তাতে অংশগ্রহণ করেন দলের একাধিক নেতা এবং কর্মীরা। বড়নীলপুরের সভায় ছিলেন সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। সেখানে বক্তৃতাও করেন তিনি। সভার পর দু’টি প্রান্ত থেকে মিছিল সমবেত হয় শহরের কার্জন গেট এলাকায়। ওই মিছিল জেলাশাসকের দফতরের সামনে পৌঁছয়। দুপুর থেকেই ওই চত্বরে পুলিশ মোতায়েন রাখা ছিল।
সিপিএমের ওই মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মিছিল আটকানোর জন্য ব্যারিকেড তৈরি করেছিল পুলিশ। সিপিএমকর্মীরা সেই ব্যারিকেড সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন। একটি ব্যারিকেড ভেঙেও ফেলা হয়। পুলিশ বাধা দিতেই ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমকর্মীদের বিরুদ্ধে। পুলিশ পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে জলকামান ব্যবহার করে। বামকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। কিন্তু তাতেও সিপিএমকর্মীরা থামেননি। তাঁরা কার্জন গেটের বিশ্ব বাংলার লোগো উপড়ে ফেলেন। আর এই ঘটনা ঘিরে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের জেরে দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন জখম হন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।
সভায় সেলিম সিপিএম কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘লুট হলে, ধর্ষণ হলে এ রাজ্যের পুলিশকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ১৯৫৯ সালে হাজার হাজার মানুষ খাদ্যের দাবিতে সমবেত হন। পুলিশ লাঠি পিটিয়ে ৮৪ জন মানুষকে খুন করে। প্রত্যেক বছর আমরা শহিদদের স্মরণ করি। কিন্তু গুন্ডা-পুলিশ নামিয়ে আমাদের দমানো যায়নি। শুভেন্দু অধিকারী কম দুর্নীতিগ্রস্ত নন। মুখ্যমন্ত্রী তালিকা করে নাম বলে দিয়েছেন। উনি যতই বিশ্ব বাংলার ঢাক পেটান না কেন, ওই ঢাক ফেটে গিয়েছে। লাল হঠেছে, কিন্তু রাজ্য বাঁচেনি। আজ রাজ্যকে বাঁচাতে লাল ঝান্ডা আবার রাস্তায় নেমেছে।’’
সিপিএমের এই কর্মসূচি নিয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘ওরা ধ্বংসকারী দল। আজ বর্ধমানের মানুষ তা দেখলেন। ‘আইন অমান্য’ করার নামে হিংসা তৈরি করল সিপিএম। এমনিতেই একের পর এক নির্বাচনে বাংলার মানুষ সিপিএমকে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। কিন্তু তবুও তাদের আস্ফালন কমেনি। ওরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছে।’’