অনুব্রত মণ্ডল
কলকাতার বিধাননগর আদালতে বৃহস্পতিবার হাজিরা দেবেন অনুব্রত মণ্ডল। আসানসোল সংশোধনাগারের পক্ষ থেকে তা আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনটাই খবর জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে। কিন্তু কারারক্ষীদের একটি সূত্র মারফত খবর, এই তাঁর শরীরের যা অবস্থা, তাতে আসানসোল থেকে কলকাতা এসে আবার ফিরে যাওয়া নিয়ে খানিক ‘শঙ্কিত’ অনুব্রত। তাঁর ভয়, শরীর আরও না খারাপ হয়ে যায়!
গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রতকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার পর থেকে আসানসোল জেলের হাসপাতালে রয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। সূত্রের খবর, বাম-আমলে ২০১০ সালে মঙ্গলকোট থানা এলাকার একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া মামলায় অনুব্রতকে বৃহস্পতিবার হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগরের এমপি-এমএলএ আদালত।
আসানসোল সংশোধনাগার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানিতে হাজিরা দেবেন অনুব্রত। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকেই তৃণমূল নেতাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। সূত্রের আরও দাবি, আসানসোল জেলা হাসপাতালে একটি বড় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দরকার হলে সেই গাড়ি করে অনুব্রতকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
কারারক্ষীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার কলকাতা যাওয়া-আসা নিয়ে খানিক ভয় পাচ্ছেন অনুব্রত। এ নিয়ে জেলের অন্য বন্দি, এমনকি সহগল হোসেনের (অনুব্রতের দেহরক্ষী, যিনিও গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন এবং আসানসোল সংশোধনাগারেই জেল হেফাজতে রয়েছেন) সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। এত দূর গিয়ে ফিরে আসায় তাঁর শরীর আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে বলে অন্য বন্দিদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে রাখা, সময় মতো ওষুধপত্র খাওয়া— এ সব তাঁকে মাথায় রাখতে হয়। তার মধ্যে এতটা রাস্তা পাড়ি দেওয়ায় ঝুঁকি রয়েছে বলেই দাবি করছেন অনুব্রত। হাজিরার বিষয়টি জানার পর থেকেই তিনি অন্য বন্দিদের সঙ্গে এ সব নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছেন বলেই দাবি করেন কারারক্ষীদের অসমর্থিত সূত্র।
প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি ও তাঁর আত্মীয়-পরিজনের নামে একাধিক সম্পত্তির নথি উদ্ধার করেছে সিবিআই। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতা ও তাঁর আত্মীয়-ঘনিষ্ঠদের নামে অন্তত ১৬২টি সম্পত্তির হদিস মিলেছে। মঙ্গলবার তাঁকে ও সহগলকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন তদন্তকারীরা। তার মাঝেই এ বার অন্য একটি মামলায় তৃণমূল নেতাকে ডেকে পাঠাল কলকাতার আদালত।