গোয়ালপাড় এলাকায় চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
ধুলোর জেরে রাস্তায় চলাচলে নাজেহাল হওয়ার দাবিতে ফের এসটিকেকে রোড অবরোধ করলেন পূর্বস্থলীর গোয়ালপাড়ার বাসিন্দারা। তবে শুধু গোয়ালপাড়া নয়, সোমবার অবরোধে সামিল হন কাছাকাছি পারুলডাঙা এবং ধোবা এলাকার মানুষজনও। বেলা ১১টা থেকে তিনটি জায়গায় প্রায় ঘণ্টা দুয়েক অবরোধের জেরে দীর্ঘ যানজট দেখা যায় রাস্তায়।
মাস ছয়েক আগে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এসটিকেকে রোড সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। বরাদ্দ হয়েছে ১৭৫ কোটি টাকা। পূর্ত দফতরের দাবি, কাজ শেষ হতে সময় লাগবে বছর দু’য়েক। বর্তমানে কাজ চলছে পূর্বস্থলী ১ ব্লকে। সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, সংস্কারের জেরে রাস্তায় উপরের আস্তরণ তুলে ফেলা হয়েছে। ফলে, যানবাহন চললেই ধুলোয় ওষ্ঠাগত হচ্ছে প্রাণ। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, পলিথিনের চাদর দিয়ে দোকানের সামনের অংশ ঢেকে রাখলেও আটকানো যাচ্ছে না ধুলো। বিশেষত মিষ্টির দোকান, হোটেল ব্যবসায়ীরা পড়েছেন মুশকিলে। এ ছাড়া, ধুলোয় শ্বাসকষ্ট, পোশাক নষ্ট হয়ে যাওয়ারও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। রবিবার এই সমস্ত অভিযোগে অবরোধ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ঠিকাদারদের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ধুলো বন্ধ করতে কাজ চলাকালীন অন্তত তিন বার জল ছেটানো হবে। কিন্তু এ দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত মাত্র এক বার অল্প জল দেয় ঠিকাদার সংস্থার লোকজনেরা। ফের নাজেহাল হয়ে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা।
এ দিন প্রথম অবরোধ শুরু হয় নসরৎপুর পঞ্চায়েতের পারুলডাঙা এলাকায় একটি ব্যাঙ্কের সামনে থেকে। পরে তা ছড়িয়ে পরে গোয়ালপাড়া এবং ধোবা এলাকায়। বেলা সওয়া ১টা নাগাদ ঠিকাদার সংস্থার এক প্রতিনিধি সৌভিক মণ্ডল লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন, ধুলো বন্ধ করতে সকাল ৮টা, দুপুর ১টা এবং বিকাল ৪টে নাগাদ জল দেওয়া হবে। এর পরে ওঠে অবরোধ। এলাকার ব্যবসায়ী নেপাল বণিক, রাজকুমার ঘোষ, কৃষ্ণ ঘোষ, ইন্দ্রজিৎ ঘোষ, চুনিরাম হাঁসদাদের ক্ষোভ, ধুলোর জেরে ব্যবসা বন্ধের মুখে। ঠিকাদারের ‘টনক নড়াতে’ এ দিনও অবরোধ করা হয়েছে, দাবি তাঁদের।
কয়েক সপ্তাহ আগে মহকুমাশাসকের দফতরে একটি বৈঠকেও এসটিকেকে রোডে ধুলোর প্রসঙ্গে ওঠে। পূর্ত দফতরের কর্তারা বৈঠকে জানান, পর্যাপ্ত জলের গাড়ি রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তার পরেও এই অবস্থা কেন। ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক (কালনা) জাহাঙ্গীর মল্লিক এ দিন পূর্ত দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ যাতে সমস্যায় না পরেন, তা দেখতে বলা হয়েছে পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের। জেলা প্রশাসনের কাছেও একটি রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।’’ পূর্বস্থলী দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘পাকা রাস্তা তৈরি করার সময় বেশি জল দেওয়াও ক্ষতিকর। এতে রাস্তার মান খারাপ হতে পারে। এটা সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে। তবে ধুলোর সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’