বর্ধমান স্টেশনে ভেঙে যাওয়া অংশ সারানো চলছে। নিজস্ব চিত্র
বর্ধমান স্টেশনে নতুন ভাবে তৈরি ভবনে ‘ফল্স সিলিং’-এর বোর্ড ভেঙে পড়ার ঘটনায় রিপোর্ট জমা দিলেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। রবিবার ঘটনার পরে হাওড়া থেকে পরিদর্শনে এসেছিল রেলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারের (২) নেতৃত্বে একটি দল। পূর্ব রেল সূত্রের দাবি, সোমবার সে দল যে রিপোর্ট জমা দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পাইপ থেকে জল চুঁইয়ে ওই বোর্ডে ঢোকেনি। ঘূর্ণিঝড় আমপানের সময়ে যে বৃষ্টি হয়, তার জল ঝুল বারান্দার ছাদে জমেছিল। তা দেওয়াল বেয়ে চুঁইয়ে ঢোকার জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ওই একটি বোর্ড নয়, ঝুল বারান্দায় আরও গোটা তিনেক ‘ফল্স সিলিং’-এর বোর্ড জল চুঁইয়ে ফেঁপে গিয়েছিল বলে জেনেছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেগুলিও যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত, মনে করছেন তাঁরা। ভেঙে পড়া বোর্ডটি ছাড়া, ওই তিনটি বোর্ডও খুলে নতুন বোর্ড বসানো হয়েছে এ দিন।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ‘ফলস সিলিং’-এর ফুট দেড়েকের একটি বোর্ড খসে পড়ে। তার খানিক আগেই কেরল থেকে ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেনে বর্ধমানে এসে নামা নাদনঘাটের সোনাপুরি গ্রামের সামিউল মণ্ডল আহত হন বলে জেলা পুলিশের দাবি। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যদিও রেলের তরফে ঘটনার পরেই দাবি করা হয়, তাদের কাছে কারও আহত হওয়ার খবর নেই।
ঘটনার খবর পেয়ে হাওড়া থেকে রেলের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারের (২) নেতৃত্বে একটি দল বর্ধমানে আসে। রেল সূত্রে জানা যায়, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দলটি এলাকা পরিদর্শন করে। বর্ধমানের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে হাওড়া ফিরে যায়। রেল সূত্রের খবর, জল চুঁইয়ে ‘ফলস সিলিং’-এর বোর্ড ফেঁপে গিয়েছিল, এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু ভবন সংস্কারের তিন মাসের মধ্যে কী ভাবে ছাদের নীচে জল চুঁইয়ে পড়ল, প্রশ্ন উঠেছে সে নিয়ে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্ব রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারেরা পরিদর্শন করে ঝুল বারান্দার ছাদের উপরে জলের দাগ দেখতে পেয়েছেন। অর্থাৎ, বৃষ্টির পরেই জল বেরনোর পথ থাকলেও তা বেরতে পারেনি। ছাদেই জল জমে ছিল। ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।’’ রেল সূত্রে আরও জানা যায়, ইঞ্জিনিয়ারেরা জেনেছেন, ছাদ থেকে জল বেরনোর পাইপলাইনও আটকে গিয়েছিল। পাইপে আটকে থাকা জলও চুঁইয়ে পড়তে পারে বলে তাঁদের অনুমান।
এ দিন সকাল থেকে বর্ধমান স্টেশনের ইঞ্জিনিয়ার, ইয়ার্ড মাস্টাররা দাঁড়িয়ে থেকে পাইপলাইন পরিষ্কার করান। তার পরে ঝুল বারান্দার ছাদে গিয়ে জল যাতে তাড়াতাড়ি বেরোতে পারে, সে ব্যবস্থা তদারক করেন। বারান্দার জল যাতে ছাদে চলে আসতে না পারে, সে জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে রেল।