ডুবুরডিহি সেতুতে এক লেনেই চলছে যাতায়াত। অন্য লেনটি দ্রুত চালু করার দাবি জানিয়েছেন চালকেরা। নিজস্ব চিত্র
বছরখানেক আগে ফাটল ধরা পড়ায় বন্ধ করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় ডুবুরডিহি সেতুর ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতাগামী লেন। ফাটল মেরামতি হয়েছে মাস ছয়েক আগে। কিন্তু এ পর্যন্ত তা চালু হয়নি। এই পরিস্থিতিতে মেরামতি হওয়া অংশ পরীক্ষা করার পরে অন্য লেনটি খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তবে কবে তা হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে তাঁরা কিছু জানাননি।
গত বছর ১৯ অক্টোবর রাতে টহলদারির সময়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের রুট পেট্রলিং দফতরের কর্মীরা লেনটির পাঁচ নম্বর স্তম্ভে ফাটল দেখেন। পরের দিন থেকে ওই লেনে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিবর্তে কলকাতা থেকে ঝাড়খণ্ডগামী লেন দিয়েই দু’দিকের যান চলাচল করানো হয়।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও আইআইটি খড়্গপুরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞেরা জানান, সেতুর ফাটল ধরা অংশের প্রায় ২০ মিটার জায়গা মেরামতি করতে হবে। সেই পরামর্শ মেনে ছ’মাস আগে শেষ হয় মেরামতি।
কিন্তু তার পরেও লেনটি চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ চালকেরা। তাঁদের অভিযোগ, বর্তমানে একটি মাত্র লেন দিয়ে দু’দিকের গাড়ি যাতায়াতের ফলে নিত্য যানজট হচ্ছে। পাশাপাশি, দু’দিকের যান চলাচলের ফলে বাড়তি ভার বহন করতে হচ্ছে লেনটিকে। সম্প্রতি এলাকাবাসীর একাংশ বিষয়টি নিয়ে আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের কাছেও ব্যবস্থার আর্জি জানান। বাবুল এ বিষয়ে বলেন, ‘‘বিষয়টি ঠিকমতো জানি না। তবে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে সমস্যার সমাধান করব।’’
তবে এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন, মেরামতির পরেও কেন ওই লেনটি খোলা হচ্ছে না। দু’নম্বর জাতীয় সড়ক ও বারবাড্ডা এক্সপ্রেসওয়ের প্রোজেক্ট ডিরেক্টর মলয়কুমার দত্ত বলেন, ‘‘মেরামতির পরে সেতুর বহনক্ষমতা দেখার জন্য কয়েকটি পরীক্ষার দরকার আছে। তা করে দ্রুত লেনটি চালু হবে।’’ মলয়বাবু জানান, প্রায় চার দশক আগে সেতুটি তৈরি করেছিল তৎকালীন বিহার সরকারের পূর্ত দফতর। সেতুটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও বহনক্ষমতা দেখার জন্য আগাগোড়া নিরীক্ষণ (‘কন্ডিশনিং অ্যাশেসমেন্ট’) করতে হবে। এই কাজের জন্য সেতুর পুরনো নকশা প্রয়োজন।
কিন্তু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বারবার চাওয়া হলেও বিহার বা ঝাড়খণ্ড সরকারের পূর্ত দফতর পুরনো নকশা দিতে পারেনি। সাত মাস অপেক্ষার পরেও সেই নকশা না পেয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদল গঠন করে সেতুটির বিস্তারিত নকশা তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছেন। নকশাটি তৈরির পরেই সেতুর বহনক্ষমতা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে।