মিছিল-অবরোধ নানা প্রান্তে, নালিশ হামলারও

নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে-বিপক্ষে এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে মিছিল হল জেলার নানা প্রান্তে। রবিবার নানা জায়গায় রাস্তা অবরোধও হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:১৮
Share:

আসানসোলে তৃণমূলের মিছিল। রবিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র

নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে-বিপক্ষে এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে মিছিল হল জেলার নানা প্রান্তে। রবিবার নানা জায়গায় রাস্তা অবরোধও হয়। তার জেরে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। তৃণমূলের তরফে বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও প্রতিবাদসভা করা হয়। পাণ্ডবেশ্বরে তৃণমূলের মিছিল থেকে বিজেপি অফিসে হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও তৃণমূল তা মানতে চায়নি।

Advertisement

এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আসানসোলের আশ্রম মোড় এলাকা থেকে তৃণমূলের একটি মিছিল বেরোয়। ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক-সহ দলের নেতা-কর্মীরা। মিছিল জিটি রোড ধরে গির্জা মোড়ে যায়। মিছিল শেষে আসানসোলে সিটি বাসস্ট্যান্ডে একটি প্রতিবাদসভাও হয়। মলয়বাবু কর্মী-সমর্থকদের পাড়ায়-পাড়ায় গিয়ে এনআরসি-র কুপ্রভাব প্রচার করার পরামর্শ দেন।

কুলটির নিয়ামতপুরে নিউ রোড এলাকায় এ দিন সকালে একটি অরাজনৈতিক মিছিল এসে জিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। তার জেরে ঘণ্টাখানেক যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। হঠাৎ অবরোধের জেরে বিপাকে পড়েন মানুষজন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিছিলটি লছিপুর থেকে শুরু হয়। নিউ রোড ঘুরে সেটি ফের লছিপুরের দিকে চলে যায়। এ দিনই বিকেলে নিয়ামতপুরে একটি মিছিল করে তৃণমূল। ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। নিউ রোড থেকে জিটি রোড ধরে নিয়ামতপুর চৌমাথা পর্যন্ত এই মিছিলের জেরেও কিছু ক্ষণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। উজ্জ্বলবাবুর হুঁশিয়ারি, এনআরসি-র বিরুদ্ধে তাঁদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলবে।

Advertisement

এ দিন তৃণমূলের মিছিল থেকে বিজেপির কার্যালয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে পাণ্ডবেশ্বরের সিনেমা হল রোডে। বিজেপি নেতা তন্ময় ঘোষ অভিযোগ করেন, বিকেল ৪টে নাগাদ তৃণমূলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তাঁদের কার্যালয়ের পতাকা খুলে ফেলে দেওয়া ও কার্যালয় লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। তখন কার্যালয় বন্ধ থাকায় কেউ জখম হননি বলে তাঁর দাবি। নরেন্দ্রনাথবাবুর পাল্টা দাবি, মিথ্যা অভিযোগ করছে বিজেপি। পুলিশ জানায়, কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় মিছিল করে কংগ্রেস। পাঁচমাথা মোড় থেকে মিছিলটি যায় ভিড়িঙ্গিতে। ছিলেন দলের নেতা দেবেশ চক্রবর্তী। শহরের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের মিছিলে নেতৃত্ব দেন কাউন্সিলর রমাপ্রসাদ হালদার, চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপু লাহা, সুনীল চট্টোপাধ্যায়েরা। নঈমনগর নাগরিক কমিটির তরফে মিছিল করা হয় এ দিন। ওল্ড কোর্ট মোড় থেকে শুরু হয়ে মিছিল ভিড়িঙ্গি মোড় পর্যন্ত যায়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল ছিলেন। মিছিলে যোগ দদিয়ে মৌলানা মেহবুব আলম রিজভি দাবি করেন, ‘‘এই আইন সমানাধিকার খর্ব করছে। তাই আমরা এর বিরুদ্ধে।’’ দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের আমলৌকা, আরতি, ইছাপুর এলাকায় তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের তরফে প্রতিবাদ মিছিল করা হয়।

কাঁকসা ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকেও নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র বিরোধিতায় মিছিলের আয়োজন করা হয়। দলের নেতা দেবদাস বক্সী জানান, পানাগড়ের দার্জিলিং মোড় থেকে রণডিহা মোড় অবধি মিছিল হয়েছে। রানিগঞ্জে নেতাজি সুভাষ বসু রাস্তার সিনেমা হলের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে এতোয়ারি মোড়ে শেষ হয়। ছিলেন তৃণমূলের রানিগঞ্জ শহর সভাপতি অলোক বসু, পুরসভার মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু ভগত প্রমুখ।

নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে এ দিনই ‘সারা ভারত মতুয়া সঙ্ঘ’-এর তরফে কাঁকসার বনকাটির শ্যামবাজার কলোনি এলাকায় মিছিল করা হয়। মিছিল এগারো মাইল এলাকা পরিক্রমা করে। ছিলেন কাঁকসার বিজেপি নেতা রমন শর্মা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement