ফাইল চিত্র।
পুরসভায় অস্থায়ী এক কর্মীকে নিয়োগ করা নিয়ে মেয়র দিলীপ অগস্তিকে প্রশ্ন করা হতেই ‘সমস্যা’। মেয়র বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে চলে যান বলে দাবি কাউন্সিলরদের একাংশের। মঙ্গলবার পুরসভার ৩৭১তম বোর্ড মিটিং থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। অভিযোগ মানেননি মেয়র।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে এর আগের তিনটি বোর্ড মিটিং বাতিল হয়। মেয়র পারিষদদের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি সাধারণত বোর্ড মিটিংয়ে পাশ করানো হয়। এ দিন নির্দিষ্ট সময়েই বোর্ড মিটিং শুরু হয়। পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেয়র কাউকে কিছু না জানিয়ে এক জন অস্থায়ী কর্মীকে নিয়োগ করেছেন পুরসভায়। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই তিনি বোর্ড মিটিং ছেড়ে চলে যান। যখনই আমরা কিছু জানতে চাই, কোনও কাজ নিয়ে দাবি করি, উনি মিটিং শেষ না করেই মাঝপথে বেরিয়ে যান।’’ তাঁর দাবি, সেই অস্থায়ী কর্মীর কাছে এ বিষয়ে তাঁরা জানতে গিয়েছিলেন। চন্দ্রশেখরবাবু বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি, তিনি দফতরে নেই। চলে গিয়েছেন। এই স্বজনপোষণ মানা হবে না। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পথে হাঁটছেন, তার বদলে অন্য পথে যাঁরা হাঁটছেন তাঁদের চিহ্নিত করে জেলা ও রাজ্য স্তরে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো হবে।’’
ঘটনাচক্রে, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মেয়রের কাজকর্মের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানান কাউন্সিলরদের একাংশ। ফেব্রুয়ারিতে দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মেয়রকে প্রশাসনিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষের জন্য কাজ করার পরামর্শ দেন। এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে পুরসভার চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল জানান, বোর্ড মিটিং চলাকালীন মেয়রের কাছে খবর আসে, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (বিদ্যুৎ) এসেছেন পুরসভায়। তিনি অনুমতি নিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য বেরিয়ে যান। মৃগেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘পরে উনি ফোনে দাবি করেন, বৈঠকে উপস্থিত এক আধিকারিকের করোনা হয়েছে। তাই তিনি আর বোর্ড মিটিংয়ে আসবেন কি না তা ভাবছেন। আমি তাঁকে জানাই, তিনি না এলে বোর্ড মিটিং পিছিয়ে দেওয়া হবে। কারণ, সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অধিকারী মেয়র।’’ তিনি জানান, মিটিং পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে, সদস্যেরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে সমস্যার জেরেই কি মেয়র আর বোর্ড মিটিংয়ে ফিরতে চাননি? চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘সেটা আমি বলতে পারি না। আমি চেয়ারম্যান। তবে কাউন্সিলরদের বক্তব্য, উনি এ ভাবেই সব সময় মিটিং ছেড়েবেরিয়ে যান।’’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যা কথা। কোনও চাকরি কাউকে দেওয়া হয়নি। এক জন অস্থায়ী কর্মী স্থায়ী হয়ে যাওয়ায় তাঁর জায়গায় আর এক জনকে অস্থায়ী ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। আইনে মেয়রের পদের ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ হয়েছে। করোনা আক্রান্ত পুরসভার সচিবের সঙ্গে বৈঠক করার পরে, আর বোর্ড মিটিংয়ে ফিরে যাওয়া উচিত কি না তা নিয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেই না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’’