Guskara

WB Municipal Election 2022: বেহাল নিকাশি, বৃষ্টি হলেই ‘ডোবে’ পাড়া

বিরোধীরা ‘বেহাল’ নিকাশি ব্যবস্থার জন্য শাসকদলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছে।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

গুসকরা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৮
Share:

অনেক এলাকাতেই পাকা নর্দমা তৈরি হয়নি। নিজস্ব চিত্র।

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে একটি দু’কুঠুরির মাটির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন পাঁচটি পরিবারের ২২ জন। সেখানেই গাদাগাদি করে অর্ধাহারে কয়েক দিন জলবন্দি অবস্থায় কাটাতে হয় তাঁদের। গত বছরের সে অভিজ্ঞতা এখনও তাড়া করে গুসকরার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের শিবতলা বিহারিপট্টির পুতুল সাহানি, রুনু ঝা, গণেশ ভগতদের। এই দুর্দশার জন্য শহরের বেহাল নিকাশি ব্যবস্থাকেই দায়ী করছেন বাসিন্দাদের একাংশ। শুধু ১২ নম্বর ওয়ার্ডই নয়, প্রায় তিন দশক আগে পুরসভার তকমা পাওয়া এই শহরের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও নিকাশি নিয়ে কম-বেশি অভিযোগ রয়েছে। পুরভোটের মুখে তাই এই শহরের সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলার আশ্বাসই সব দলের প্রচারের ‘হাতিয়ার’ হয়ে উঠেছে।

Advertisement

বিরোধীরা ‘বেহাল’ নিকাশি ব্যবস্থার জন্য শাসকদলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছে। আর শাসক দলের দাবি, নিচু এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি তৈরি হওয়ায় কিছু এলাকায় জল আটকে যাচ্ছে।

কালের নিয়মে গুসকরা শহরে বাড়ছে বসতি, জনসংখ্যা। কিন্তু সামঞ্জস্য রেখে নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে, সামান্য বৃষ্টি হলেই জলবন্দি হয়ে পড়াই শহরের চেনা ছবি।

Advertisement

বাসিন্দাদের দাবি, নর্দমা থেকে অনেক জায়গায় বসত বাড়ির মধ্যে জল ঢুকে যায়। জমা জলে পোকামাকড়, সাপখোপের উপদ্রব বাড়ে। অনেক নলকূপ জলের তলায় চলে যায়। জলের মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করতে হয় তখন।

সারা বছর শহরের জল গিয়ে জমা হয় বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ দিকে শান্তিপুরের মাঠে। এতে বছর দশেক ধরে ওই এলাকার প্রায় ১৫০-২০০ বিঘা জমিতে চাষ হয় না বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের।

শান্তিপুরের বাসিন্দা কবিতা হালদার, নিরঞ্জন মণ্ডলদের অভিযোগ, “মাঠ থেকে জল বার করার ব্যবস্থা করেনি পুরসভা। এতে চাষ বন্ধ হয়েছে। দুর্গন্ধে জীবন অতিষ্ঠ। পুরসভাকে বার বার লিখিত ভাবে জানিয়েও সুরাহা হয়নি।’’

১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের পাড়ায় নিকাশি নালা নেই। কুনুরের জল পাড়ায় ঢুকলে বেরোতে পারে না।

পুরসভার আধিকারিকদের দাবি, গুসকরার ভৌগোলিক গঠন গামলার মতো। উত্তরে কুনুর এবং দক্ষিণে কাঁদর রয়েছে। তাই শহরের জল নিকাশি ঠিক মতো হয় না। কুনুরে জল না কমা পর্যন্ত শহরে জল জমে থাকে। অন্য দিকে, কুনুরের স্বাভাবিক গতিপথ আটকে ‘হিউম’ পাইপ দিয়ে সেতু তৈরি করায় পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকার জমির জল বেরোতে পারছে না বলে অভিযোগ।

পুরসভার দাবি, বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে নিকাশি নিয়ে ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি করা হলেও তা এগোয়নি। পরে, অনেক নর্দমা তৈরি করা হয়েছে। নিয়মিত নর্দমা সাফাই করা হয় বলেও দাবি করা হয়েছে।

যদিও এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, বামফ্রন্টের সময়ে একটি হাইড্রেন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলেও মাঝপথেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখনও শহরের অনেক এলাকায় পাকা নর্দমা তৈরি হয়নি।

বিজেপির গুসকরা নগর মণ্ডলের সভাপতি পতিতপাবন মণ্ডলের দাবি, ‘‘সিপিএম বা তৃণমূলের পুর-বোর্ড নিকাশি নিয়ে কোনও পরিকল্পনা করেনি। যে সব পুকুর বা জলাশয়ে জল নিকাশি হত, সেগুলি বুজিয়ে বাড়ি তৈরি করা হচ্ছে।’’

অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের শহর সভাপতি তথা ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগে অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হাইড্রেন অনেক জায়গায় বুজে গিয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement