প্রধান এই বাড়িতেই থাকেন বলে দাবি এলাকাবাসীর একাংশের। নিজস্ব চিত্র
মাস দুয়েক আগে মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতে টেন্ডার নিয়ে বিতর্ক বেধেছিল। দরপত্রে দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ তুলে দলেরই এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন প্রধান। এ বার আবাস প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্বের তালিকায় ওই তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে গুচ্ছ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিজের নাম তো বটেই, তাঁর স্বামী, শ্বশুর, নন্দাইয়ের মতো আট ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের নামও ওই তালিকায় রয়েছে। তালিকা প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূলে। যদিও নেতৃত্বের দাবি, প্রধান-সহ প্রত্যেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রধানের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।
মঙ্গলকোট ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকৃত গরিব মানুষেরা যাতে সরকারি বাড়ি পান তা নিশ্চিত করতে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। তাতে ধরা পড়েছে, ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, ধান্যরুখি গ্রামের বাসিন্দা পার্বতী ঘোষ ও তাঁর আট আত্মীয়ের নাম রয়েছে তালিকায়। তার সঙ্গে গ্রামের অবস্থাপন্ন কয়েকজনের নামও ওই তালিকায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিরোধীদের দাবি, প্রত্যেকের পাকা বাড়ি, জমি রয়েছে। তার পরেও আবেদন করলেন কী ভাবে?
মঙ্গলকোটের সিপিএম নেতা সাজাহান চৌধুরী ও মঙ্গলকোট ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি গুরুসদয় চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল এ ভাবেই স্বজনপোষন করে আসছে। প্রকৃত গরিব মানুষদের বঞ্চিত করে দলেরই অবস্থাপন্নদের আবাস যোজনা প্লাস তালিকায় নাম তুলে দিয়েছে। আমারা আন্দোলনে নামব।’’ পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি সভাপতি (কাটোয়া সাংগঠনিক) গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘গোটা রাজ্যে তৃণমূল এ ভাবেই সরকারি ঘর নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। কোনও ভাবেই তৃণমূল এই দুর্নীতি ঢাকতে পারবে না।’’
মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরীর অবশ্য দাবি, ‘‘কোনও কারণে হয়ত তালিকায় নাম উঠেছিল। আমরা তা জানা মাত্রই প্রধান ও তাঁর আত্মীয়দের নাম বাদ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’’
ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্বতী ঘোষের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বারবার ফোন কেটে দেন। ফোন বন্ধও করে দেন। বিডিও জগদীশচন্দ্র বারুই বলেন, ‘‘উপভোক্তাদের তালিকায় প্রধান ও তাঁর আত্মীয়দের নাম ছিল। কিন্তু তাঁরা কেউই সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য নন। তাই নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।’’