বারাবনির এই জায়গাতেই হবে পর্যটনকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।
বারাবনির মন্দিরা ড্যাম, রুনাকুড়া ঘাট লাগোয়া বনাঞ্চল এবং পানিফলা উষ্ণ প্রস্রবণকে কেন্দ্র করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এমনটাই জানিয়েছে বারাবনি ব্লক প্রশাসন এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ। সরকারি স্তরে সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দু’দশক আগে উষ্ণ প্রস্রবণের জল সংরক্ষণ করে একটি পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছিল। পার্শ্ববর্তী কিছু গ্রামের ১৭ জন বাসিন্দা এর জন্য জমি দান করেছিলেন। পর্যটকের ভিড় বাড়তে থাকায় স্থানীয়েরা আশপাশে একাধিক দোকান দিয়ে রোজগারও করছিলেন। কিন্তু পরে দেখভালের অভাবে কেন্দ্রটি কার্যত খণ্ডহরে পরিণত হয়। প্রশাসনের কর্তারা জানান, জমিদাতাদের আবেদনের সূত্রে কেন্দ্রটি ফের সংস্কার ও পরিমার্জনের কাজ শুরু হয়েছে। চতুর্দিকে পাঁচিল তোলা হচ্ছে। পর্যটক বিশ্রামস্থল, শিশুদের জন্য খেলার জায়গা করা হচ্ছে। পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ ও বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকায় এই কাজ হচ্ছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউড়ি বলেন, “রাজ্য সরকার পর্যটন শিল্পকে উৎসাহিত করছে। সেই লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা।”
প্রশাসন জানিয়েছে, পানিফলার পাশাপাশি বারাবনির মন্দিরা ড্যাম ও অজয়ের রুনাকুড়া ঘাট লাগোয়া বনাঞ্চলে নতুন দু’টি পর্যটনকেন্দ্র তৈরি হবে। বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্টও তৈরি করা হয়েছে। খরচ ধরা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসিত সিংহ বলেন, “বারাবনির বিস্তীর্ণ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা ভেবে প্রশাসনের তরফে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষা করা হচ্ছে। সবুজ সঙ্কেত পেলে কাজে হাত পড়বে।” বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল এবং জেলা পরিষদ থেকে আর্থিক অনুদান মিলেছে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরেই কাজ শুরু হবে বলে প্রশাসনের দাবি।
বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার কৃষিকাজের উন্নতির জন্য অজয় থেকে খাল কেটে ড্যামটি তৈরি করা হয়েছিল। ড্যামে দাঁড়িয়ে সুর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। এক সময় শুধু এই শিল্পাঞ্চলই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা এখানে ভিড় জমাতেন। কিন্তু পর্যটকদের সুবিধায় কোনও পরিকাঠামো গড়ে না ওঠায় এই ড্যাম জনপ্রিয়তা হারায়। সমিতি জানিয়েছে, পর্যটকদের জন্য কটেজ তৈরি ও একাধিক পরিকাঠামো গড়া হবে। ড্যামের জলে নৌকা-বিহারের ব্যবস্থা থাকবে।
বারাবনির বিধায়ক বিধান বলেন, “নানা এলাকার পর্যটকেরা মনোরঞ্জনের জন্য এখানে আসবেন। এলাকার গুরুত্ব বাড়বে। স্থানীয় বেকার যুবক-যুবতীরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।”