এই গর্তে পড়েই মারা যান ওই ব্যক্তি। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা সম্প্রসারণের কাজের জন্য কেটে রাখা গর্তে পড়ে মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে গুসকরায়। মৃত ব্যক্তি হরেন মণ্ডল (৪৭) গুসকরা পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মী ছিলেন। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হরিশপুকুর পাড়ের ওই বাসিন্দার পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুসকরা শিরিষতলা এলাকায় বিপজ্জনক গর্তে পড়ে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও থানায় কোনও অভিযোগ হয়নি। এলাকাবাসীর একাংশেরও দাবি, কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই জনবহুল এলাকায় বড় গর্ত কেটে কাজ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরে গুসকরা শহরের মধ্যে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর। এর জন্য রাস্তার ধারে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা, বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানো, গাছ কাটার মতো নানা কাজও করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বাসস্ট্যান্ড থেকে স্টেশন যাওয়ার রাস্তায়, শিরিষতলা এলাকায় একটি বড় গাছ কেটে, গাছের গুঁড়ি তোলার জন্য মূল রাস্তার পাশে প্রায় ফুট চারেক গর্ত খোঁড়া হয়। পাইপ লাইন ফেটে সেই গর্তে জলও জমে যায়। ওই দিনই সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ে ওই গর্তে পড়ে যান হরেনবাবু। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠান। সেখানেই কিছুক্ষণ পরে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, ওই ব্যক্তি মত্ত অবস্থায় ছিলেন।
ঘটনায় পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, জনবহুল এলাকায় রাস্তার ধারে গর্ত খুঁড়ে কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিয়ে কাজ করাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ওই রাস্তার উপরে কয়েকটি ব্যাঙ্ক রয়েছে। তা ছাড়া দিনভর নানারকম যানবাহন চলে। গর্তের কারণে রাস্তা সরু হয়ে চলাফেরায় মুশকিল হচ্ছে বলেও দাবি পথচারী, সাইকেল আরোহী থেকে বাইক আরোহীদের। গর্তের ধারে কোনও ব্যারিকেডও রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। রাতে জলভরা গর্তে যানবাহন পড়ে আরও বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। মৃতের আত্মীয়া নন্দিনী মণ্ডল, স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ সরকারদের দাবি, “গর্ত খোঁড়ার পরে জায়গাটি ঘিরে রাখলে কাউকে এ ভাবে বেঘোরে মরতে হত না।’’
পূর্ত দফতরের ভাতার হাইওয়ে সাব ডিভিশন ২-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নাড়ুগোপাল দাসের দাবি, “ঠিকাদার সংস্থার তরফে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করা হচ্ছে। ওই এলাকায় গর্ত খোঁড়ার পরে এ ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল কিনা, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’ এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সতর্ক করা হবে বলেও জানান তিনি।