প্রতীকী ছবি।
করোনা-আতঙ্কে এক যুবকের দেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। পঞ্চায়েত প্রধান দেহ শ্মশানে পাঠানোর বন্দোবস্ত করলে সেখানেও কিছু মানুষজন বাধা দেন বলে অভিযোগ। সোমবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার পুলিশ দেহটি হাসপাতালে পাঠায়। তবে মৃতের শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ মেলেনি বলে দাবি কালনা মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। মঙ্গলবার ময়না-তদন্তের পরে, দেহ সৎকার হয়।
স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে নিয়ে হাটকালনা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন বছর তেত্রিশের ওই যুবক। স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন তিনি। পরিবার সূত্রের দাবি, নানা রকম নেশা করতেন ওই যুবক। দিন পাঁচেক আগে তাঁর চিকেন-পক্স হয়। জ্বরও ছিল। সোমবার শ্বশুরবাড়িতেই তাঁর মৃত্যু। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জ্বরে যুবকের মৃত্যু হয়েছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক তৈরি হয় এলাকায়। দেহ সৎকারে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি কেউ।
ঘণ্টা পাঁচেক পরে, সন্ধ্যায় খবর পেয়ে গ্রামে পৌঁছন হাটকালনা পঞ্চায়েতের প্রধান শুভ্র মজুমদার। তিনি জানান, কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকেন মৃত যুবকের দুই ভাই। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। রাতে দুই ভাই এসে একটি শববাহী গাড়িতে দেহ নিয়ে মালতীপুরের শ্মশানঘাটে যাওয়ার জন্য রওনা দেন। কিন্তু ঘাটের কাছেও কিছু মানুষ তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। পুলিশ রাতে দেহটি কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়।
মঙ্গলবার হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘হাসপাতালে দেহ আসার পরে, প্রশাসনের তরফে বিষয়টি জানানো হয়। তবে আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, ওই যুবকের শরীরে চিকেন পক্সের দাগ রয়েছে। মৃতের যকৃতের অবস্থাও খারাপ ছিল। আপাতত করোনার কোনও উপসর্গ মেলেনি। ময়না-তদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আর্জি, অযথা সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত না হওয়া উচিত।
মহকুমাশাসক (কালনা) সুমনসৌরভ মোহান্তি জানান, মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরকে ওই যুবকের করোনা-সংক্রান্ত পরীক্ষা করানোর কথাও বলা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হন, ব্লক প্রশাসনকে পঞ্চায়েত স্তরে সে প্রচার চালাতে বলা হয়েছে। হাটকালনা পঞ্চায়েতের প্রধানের বক্তব্য, ‘‘প্রথমে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসেননি। তবে খবর দেওয়ার পরে, মৃতের দুই ভাই-সহ কয়েকজন আত্মীয় আসেন। দেহ ময়না-তদন্তের পরে, মালতীপুর শ্মশানঘাটেই সৎকার হয়েছে।’’ তিনি জানান, এলাকার মানুষের আতঙ্ক কাটাতে পঞ্চায়েত প্রচার চালাবে।