ছেলে সৌমাল্যকে ফাঁসানো হয়েছে বলেই মত বাবা সলিলকুমার চৌধুরীর। নিজস্ব চিত্র
মাথার উপর ২০টা চুরির অভিযোগ ঝুলছে। অথচ আসানসোলের বাসিন্দা, ইংরিজিতে এমএ পাশ করা সৌমাল্য চৌধুরী ‘নির্দোষ’। তাঁকে ‘ফাঁসিয়েছে কয়েক জন যুবক’। ‘গুণধর’ ছেলের কীর্তি শোনার পর, এমনটাই দাবি করেছেন সৌমাল্যর বাবা সলিলকুমার চৌধুরী। চুরির অভিযোগে ছেলে শ্রীঘরে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর, সোমবার মুখ খুলেছেন তিনি।
সলিল জানিয়েছেন, রবিবার সংবাদমাধ্যমে পুলিশের হাতে ছেলের গ্রেফতারের খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। রাজ্য সরকারের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর, আসানসোলের কোর্ট মোড়ের একটি আবাসনে এখন একাই থাকেন সলিল। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে নির্দোষ, ওকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার ছেলে অসৎ পথে যেতে পারে না।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর প্রথম বার গ্রেফতার হয় সৌমাল্য। তার পর পরই আত্মঘাতী হন তাঁর মা মধুছন্দা চৌধুরী। তিনি ছিলেন শিক্ষিকা। মধুছন্দা অপমানে আত্মঘাতী হয়েছিলেন বলে স্থানীয়দের দাবি। কিন্তু তার পরেও চুরি ছাড়তে পারেনি সৌমাল্য। বরং চুরির নেশাই হয়ে উঠেছে তার পেশা। সৌমাল্যর বাবার দাবি, ‘‘ব্যাঙ্কের সমস্ত লেনদেন করত সৌমাল্য এবং তার মা। সৌমাল্যকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নিও দেওয়া হয়েছিল। এমনকি আমার ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত লেনদেনও করত সৌমাল্য। কিন্তু স্থানীয় কয়েক জন বন্ধু ওকে ভুল বুঝিয়ে নিজেদের দলে টেনে নেয়। তার পর তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আমার এবং মধুছন্দার জমানো সমস্ত টাকা তুলে নিতে বাধ্য করে।’’
সৌমাল্যের বিরুদ্ধে বড়সড় চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন তাঁর বাবা। সলিলের বক্তব্য, ‘‘অজয় দাস নামে ওর বন্ধুদেরই এক জন আমাদের বাড়ির দলিলটা পর্যন্ত নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। জমানো সমস্ত টাকা ওই যুবকরা তুলে নেওয়ায় আমি এখন নিঃস্ব।’’
রবিবার পাঁশকুড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় সৌমাল্যকে। এ ছাড়াও গ্রেফতার হয় তার আরও ২ সঙ্গী প্রকাশ শাসমল এবং মাধব সামন্ত। অভিযোগ, আসানসোল, হাওড়া এবং হুগলি জেলার ২০টি চুরির ঘটনার সঙ্গে যোগ রয়েছে সৌমাল্যর। হাওড়ায় গয়না চুরির ঘটনার সূত্র ধরে রবিবার ‘উচ্চশিক্ষিত’ ওই চোরকে গ্রেফতার করে সাঁকরাইল থানার পুলিশ।